ব্যাংক আলফালাহর ব্যবসা অধিগ্রহণ করবে ব্যাংক এশিয়াআজ এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট সেবাথাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীআনাড়ি হাতে ২০ টন ট্রাক, ফের সড়কে ঝরল ১৪ প্রাণইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র
No icon

ইরানের প্রেসিডেন্টকে যে কারণে আমন্ত্রণ জানালেন সৌদি বাদশাহ

কিছু দিন আগেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে দ্যা-কুমড়া সম্পর্ক ছিল। তবে চীনের মধ্যস্ততায় সম্প্রতি ইরান ও সৌদি আরব সাত বছর পর আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই সম্পর্ক জোরদার ও দুই দেশের মধ্যে ভাতৃত্ব বাড়াতে ইরানের প্রেসিডেন্টকে সৌদি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাদশাহ সালমান। সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। এ সফরের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে।ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে সরকারি সফরে সৌদি বাদশাহ সালমান নিজেই আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুটি দেশ নিজেদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্টকে সৌদি সফরের আমন্ত্রণ জানানো হলো। বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের পাঠানো চিঠিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে রিয়াদে সরকারি সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সৌদি আরব এখনো এ বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
এদিকে দুই মাসের মধ্যে দুই দেশ পরস্পরের রাজধানীতে তাদের দূতাবাসও খুলবে, যা পশ্চিম এশিয়ার এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিকে নতুন আকার দিতে পারে।মোহাম্মদ জামশিদি নামে ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সৌদি রাজধানী রিয়াদ সফরের আমন্ত্রণ সম্পর্কে টুইট করেছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসি সৌদির আমন্ত্রণকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং সহযোগিতা প্রসারিত করতে ইরানের প্রস্তুতির ওপর জোর দিয়েছেন ।

পৃথকভাবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, দুই দেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি বৈঠক করতে সম্মত হয়েছে এবং বৈঠকের তিনটি সম্ভাব্য স্থানের নামও প্রস্তাব করা হয়েছে। অবশ্য তিনি স্থানগুলোর নাম বলেননি এবং ঠিক কবে এই বৈঠক হতে পারে তাও বলেননি।বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সম্পাদক সেবাস্টিয়ান উশার বলেছেন, চীনের মধ্যস্থতায় কয়েক দিনের আলোচনার পর অপ্রত্যাশিতভাবে আসা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সাম্প্রতিক উন্নতি ব্যাপক গতি তৈরি করছে বলে মনে হচ্ছে। উভয় দেশই ঘোষণা করেছে, তারা দুই মাসের মধ্যে একে অপরের দেশে আবারও দূতাবাস খুলবে এবং বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।অতীতে এ দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার বহু প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর সাম্প্রতিক এই অগ্রগতিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘসহ অনেকেই সতর্কভাবে স্বাগত জানিয়েছে।সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইরান ও চীন- দুই দেশের সঙ্গেই তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন আছে। আবার ইয়েমেনে যে গৃহযুদ্ধ চলছে, সেখানে ইরান এবং সৌদি আরব দুই পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে থাকে।২০১৬ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সেই বছর সৌদি আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তার পর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তার পর থেকে সুন্নি ও শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।