NEWSTV24
মধ্য এপ্রিলে আরও বাড়ার শঙ্কা
বৃহস্পতিবার, ০৮ এপ্রিল ২০২১ ১৩:৫৯ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে করোনা সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এ মুহূর্তে সংক্রমণশীলতা (রিপ্রডাকশন নাম্বার) দেড় শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ, একজন আক্রান্ত ব্যক্তি একের অধিক ব্যক্তিকে সংক্রমিত করছেন। এ ছাড়া জনসাধারণের প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার প্রতি অনীহা, অতি সংক্রমণশীল এলাকায় পরীক্ষা করে রোগীদের আইসোলেশনে নেওয়া এবং স্বজনদের কোয়ারেন্টিন (সঙ্গরোধ) না-করার কারণেই মূলত দিনদিন সংক্রমণের ভয়াবহতা বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের আরও অভিমত, দৈনিক আক্রান্ত রোগীর হার ২ থেকে বর্তমানে প্রায় ২৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বেশিরভাগ জেলায় কোভিড রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্প্রসারণ না-করায় সেখান থেকে রোগীরা ঢাকামুখী হচ্ছেন। কিন্তু ঢাকায় এই বিপুলসংখ্যক রোগীর পর্যাপ্ত চিকিৎসাব্যবস্থা নেই। পাশাপাশি সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে সরকার শর্তসাপেক্ষে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু সব অফিস খোলা রেখে, যানবাহন চালু রেখে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেটি কাজে আসছে না। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি দুদিন আগে জানিয়ে দেওয়ায় পর্যাপ্তসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের মধ্যে যারা ভাইরাসটির বাহক ছিলেন, তারা এটি নিজ নিজ এলাকায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে সংক্রমণের হারও বাড়ছে।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ভাইরাসবিদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোয় সংক্রমণের হার আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। গত বছর আমাদের দেশে ইটালিয়া ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এ ধরনের সংক্রমণের পর মানুষের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়। কিন্তু বর্তমানে যে ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেক্ষেত্রে ওই অ্যান্টিবডি কোনো কাজে আসছে না। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এসব নিয়ে কোনো গবেষণা হচ্ছে না। এখনো দেশের বেশিরভাগ জেলায় আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট-নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) স্থাপন করা হয়নি। কারণ, ওই জেলা হাসপাতালগুলোয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট নেই। প্রধানমন্ত্রী বলার পরও এই কাজগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে ওইসব জেলার সব রোগী উন্নত চিকিৎসা পেতে ঢাকায় আসছেন। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে দুদিন আগেই সবাইকে জানিয়ে দিল। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ গণপরিবহণে গাদাগাদি করে গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দিলেন। ফলে পরিবহণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় রোগটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল। এদিকে সব অফিস-আদালত, কলকারখানা খোলা রেখে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো। এমনকি বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলো। কিন্তু অতি সংক্রমণশীল এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে পরীক্ষা বাড়ানো, আক্রান্তদের আইসোলেশন এবং আক্রান্ত পরিবারগুলোকে কোয়ারেন্টিন করা হলো না। অর্থাৎ, সামগ্রিক পরিবেশটি সংক্রমণ বৃদ্ধিতে সহায়ক।