NEWSTV24
ঢাকায় বাড়বে ভবনের উচ্চতা
বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫ ১৫:০৫ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) আবার সংশোধন করা হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এলাকাভিত্তিক ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) বাড়ানো হচ্ছে, যা ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে। মূলত আবাসন ব্যবসায়ী ও স্থপতিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই সংশোধন আনা হচ্ছে। ফলে মোহাম্মদপুর-মিরপুর-বাড্ডা-সবুজবাগ-খিলগাঁও-বাসাবো ও জাফরাবাদ এলাকার ফার বাড়ানো হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকার মধ্যে বৃদ্ধির তালিকায় আর রয়েছে- দাসেরকান্দি, কাচপুর, ময়নারটেক, আলীপুর, রুহিতপুর, বিরুলিয়া, বনগ্রাম এ রকম কম-বেশি ১৬টি জনঘনত্ব ব্লকের ফার কিছুটা সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সুবিধা নিতে হলে সড়কের প্রশস্ততা কমপক্ষে ২০ ফুট থাকতে হবে। যদিও আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এই প্রস্তাবকে অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য বলছে। কিন্তু নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করেন, ঢাকাকে রক্ষা করতে হলে ২০ ফুট সড়কের বাধ্যবাধকতার সঙ্গে আপস করা যাবে না। এদিকে ড্যাপ বাস্তবায়নকারী সংস্থা রাজউক মনে করে সংশোধিত ড্যাপটি সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে। এখানে বাসযোগ্যতা যেমন থাকবে, তেমনি ভবন হবে না সেই ভাবনাও দূর হবে।

জানা গেছে, খুব শিগগিরই সংশোধিত ড্যাপের গেজেট প্রকাশ করা হবে। ড্যাপের গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর আবাসন খাত আবার কর্মযজ্ঞতা ফিরে পাবে, এমনই মনে করেন রাজউকের কর্মকর্তারা। গত এক বছরে ড্যাপের কারণে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে রিহ্যাব। নির্বাচিত নতুন সরকার দায়িত্বগ্রহণের আগেই সংশোধিত ড্যাপের বাস্তবায়ন হবে।ঢাকার বাসযোগ্যতা টিকিয়ে রাখতে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ প্রণয়ন করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। ঢাকার ওপর মানুষের চাপ কমানো এবং পরিকল্পিত আবাসন গড়ার উদ্দেশ্যে তৈরি হয় ড্যাপ। শুরু থেকেই আবাসন ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে ছাড় দিয়ে ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট নতুন ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) কার্যকরের গেজেট প্রকাশ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গেজেট প্রকাশের পর থেকেই এর কিছু বিষয় সংশোধনের জন্য আবাসন কোম্পানিগুলো সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।কোম্পানিগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৬ জানুয়ারি ড্যাপ সংশোধন করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সে সময়ও সরকারি-বেসরকারি আবাসন, অপরিকল্পিত এলাকা, ব্লকভিত্তিক আবাসন, একীভূত প্লটে ফার সুবিধা বাড়ানো হয়। তাতেও আবাসন কোম্পানিগুলোর মনোমতো না হওয়ায় ড্যাপ মেনে নিতে পারেনি। আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) শুরু থেকেই ড্যাপ বাতিল করে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ অনুসরণের দাবি করে আসছিল।

আবাসন ব্যবসায়ীদের চাপে আবার ড্যাপে কাটাছেঁড়া করার উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আবাসন ব্যবসায়ী ও ঢাকার ভূমি মালিকদের দাবির মুখে এলাকাভিত্তিক ফার (ফ্লোর এরিয়া রেশিও) বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এলাকাভিত্তিক ফার ৩০-৪০ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সব এলাকার ফার বাড়ছে না। যে এলাকার ফার যত বড়, সেই এলাকার ভবনের উচ্চতা তত বেশি।জানা গেছে, ফার বাড়তে পারে যেসব এলাকায় তার মধ্যে রয়েছে- জাফরাবাদ, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বাড্ডা, সবুজবাগ, খিলগাঁও, বাসাবো, ডেমরা, যাত্রবাড়ীসহ কয়েকটি এলাকা। এসব এলাকার কোথাও ৩০ শতাংশ, আবার কোথাও ৪০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। মিরপুর এলাকায় আগে ফার ছিল ২.৮, সেখানে এখন বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ৩.৪; বাড্ডায় ছিল ২, সেখানে করা হয়েছে ৩.৪; খিলগাঁও, বাসাবো আগে ছিল ২, সেখানে করা হয়েছে ৩.৪; ডেমরা এলাকায় আগে ছিল ২, সেখানেও ৩.৪ করা হয়েছে।তবে গ্রামীণ এলাকার (যেমন দাসেরকান্দি, কাঁচপুর, ময়নারটেক, আলীপুর, রুহিতপুর, বিরুলিয়া, বনগ্রাম ইত্যাদি) কম-বেশি ১৬টি জনঘনত্ব ব্লকের ফার কিছুটা সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিবিএস ২০১১-এর হাউসহোল্ড সাইজ বিবেচনায় নিয়ে আবাসন ইউনিট নির্ধারণ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।তবে সংশোধিত ড্যাপেও ফার বাড়ছে না কিছু এলাকার। সেসব এলাকার মধ্যে কোথাও কোথাও ফার কমেছে বলে জানা গেছে। তার মধ্যে রয়েছে গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডি। এসব এলাকার কোথাও কোথাও দশমিক ২ করে ফার কমানো হয়েছে।