NEWSTV24
করাচি সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করবে বাংলাদেশ
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৪৯ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ যাতে পাকিস্তানের করাচি সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে পারে সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। ফলে চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যেও বন্দরটি ব্যবহার করা যাবে। তবে কবে থেকে ও কীভাবে তা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে দুই দেশের কর্মকর্তাদের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে। ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের দিন-তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি। বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ ইকোনমিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকে এ রকম আরও কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে দুই পক্ষ। বাংলাদেশের পাট পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও জানিয়েছে পাকিস্তান। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বিমান যোগাযোগ, বিনিয়োগ সুরক্ষা, কৃষি, ব্যাংকিং, আর্থিক সেবা, জ্বালানি সহযোগিতা এবং শিক্ষা ও প্রযুক্তি সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার নবম এই জেইসি বৈঠকে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পাকিস্তানের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক। দুই দশক পর বাংলাদেশ-পাকিস্তানের জেইসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে ২০০৫ সালে সর্বশেষ বৈঠক হয়।বৈঠকে অংশ নেওয়া অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ যাতে পাকিস্তানের করাচি সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে পারে, সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ। এ বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকেই বেশি আগ্রহ দেখানো হয়েছে। এখন কীভাবে বন্দর ব্যবহার করা যায় তার আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তারপর বোঝা যাবে, করাচি বন্দর ব্যবহার বাংলাদেশের জন্য কতটা লাভজনক হতে পারে। দুই দেশের সুবিধামতো সময়ে ওই বৈঠক হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে জেইসির প্রস্তুতি সভায় জানানো হয়, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে করাচি বন্দর ব্যবহারের সুযোগ থাকবে। এতে অন্যান্য দেশেও পণ্য পরিবহন করা যাবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও পাকিস্তানের শিপিং করপোরেশনের মধ্যে   b  একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আগ্রহের কথা জানানো হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। গতকালের বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এক ব্রিফিংয়ে বলেন, দুই দেশের মধ্যে নৌ চলাচল, আকাশ পথের যোগাযোগ বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কৃষি, বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও খাদ্য ইত্যাদি নিয়ে আলাদা আলাদা আলোচনা হয়েছে। এগুলো দুই দেশের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে এ আলোচনার ফলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বাড়বে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। আমরা বাংলাদেশ থেকে পাট, ওষুধ নেওয়ার বিষয় আলোচনা করেছি। বিএসটিআই ও পিএইচএর মধ্যে এমওইউ সভা শেষে দুই দেশের মধ্যে হালাল বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এবং পাকিস্তান হালাল অথরিটির (পিএইচএ) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাকসুরা নূর এবং পাকিস্তান সরকারের পক্ষে ঢাকাস্থ পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

এদিকে গতকাল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক। বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে। এখন প্রয়োজন অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়ন। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করতে এবং বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। এ সময় পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাবনাগুলো পুরোপুরি কাজে লাগানো হয়নি। এ সময় বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর মাধ্যমে এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।