NEWSTV24
স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচিতে অনিয়ম
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:১৭ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

জয়পুরহাটের কালাইয়ের তেলিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত শিক্ষার্থী দেখিয়ে বরাদ্দ দুধ প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা ভাগবাটোয়ারা করে বাড়ি নিয়ে যান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন অনিয়মে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।সরকার ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিতে দুধ পান কর্মসূচি চালু করেছে। প্রথম পর্যায়ে ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই প্রকল্প চালু হয়। সপ্তাহে পাঁচ দিন শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ দেওয়া হয় ২০০ মিলি করে তরল দুধ। কর্মসূচির লক্ষ্য বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার বৃদ্ধি ও শিশুদের অপুষ্টিজনিত সমস্যার সমাধান। তেলিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এই কর্মসূচিতে স্থান পায়।অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিস্টার অনুযায়ী ৮২ জন শিক্ষার্থীকে সপ্তাহে পাঁচ দিন ২০০ মিলি করে তরল দুধ সরবরাহের কথা। প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত আরও ৩৮ জনের নাম যুক্ত করে প্রতিদিন ১২০ জনের নামে দুধ তুলছেন। তিনি প্রতি সপ্তাহে দুধ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত শিক্ষার্থীদের থেকে একটি শিটে স্বাক্ষর নেন। সেই শিট উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে জমা দিয়ে ডিলারের কাছ থেকে দুধ বুঝে নেওয়া হয়। গত ৬ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে স্কুল বন্ধ ছিল। ওই দিনও শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নিয়ে দুধ তোলা হয়েছে। এভাবেই তারা খুদে শিক্ষার্থীদের খাবার আত্মসাৎ করে আসছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৪ থেকে ৬৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। প্রধান শিক্ষক ১২০ জনের রিপোর্ট পাঠান। রেজিস্টারে নতুন শিক্ষার্থীর নাম যুক্ত করা হয়েছে। তারা স্থানীয় নয়, এমনকি কখনও বিদ্যালয়ে আসে না। তাদের নামে বরাদ্দ দুধ প্রধান শিক্ষকের পছন্দের শিক্ষকরা বাড়িতে নিয়ে যান।অভিভাবক রমজান আলী বলেন, গত রোববার ৫৩ জন ছেলে-মেয়ে স্কুলে উপস্থিত ছিল। দুধ আনা হয়েছে ১১০ জনের নামে। বাকি দুধ শিক্ষকরা ব্যাগে করে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অভিভাবক বলেন, শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিতের জন্য সরকারের মানবিক উদ্যোগকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিক্ষক নামে এক শ্রেণির হীন মানসিকতার লোক এ ধরনের কাজ করছেন। তারা ছোট শিশুদের প্রাপ্য পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করে অপরাধ করছেন।ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উদয় চন্দ্র পাল বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৯০-৯৫ জনের জন্য দুধ আসে। উপস্থিতি অনুযায়ীই বিতরণ করা হয়। গড়ে ৬০-৬৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। বাকি দুধ কী করেন, জানতে চাইলে কোনো জবাব দেননি। বন্ধের দিনও দুধ বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, এসব অপপ্রচার।প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল আলম বলেন, স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচিতে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। তারপরও খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তদারকি কমিটি গঠন করা হবে।