প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেনগরমের তীব্রতা কমাতে কী কাজ করেছেন, জানালেন হিট অফিসারবিনা ভোটে নির্বাচিত ৩৩ প্রার্থীসব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি যেসব অঞ্চলে
No icon

রবি ঠাকুর, গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত পানিহাটি সপরিবার ছুটি কাটানোর ঠিকানা

রবি ঠাকুর, গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত পানিহাটিও হতে পারে সপরিবার ছুটি কাটানোর ঠিকানা। গঙ্গার ধার মানেই বোটানিক্যাল গার্ডেন বা প্রিন্সেপ ঘাট নয়। কলকাতার কাছে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিও তেমন একটি জায়গা।
উত্তরে বাতাস বইতে শুরু করলেই বাঙালির মন কেমন যেন উড়ু উড়ু হয়ে যায়। শীতের ছুটির প্রতিটি দুপুরেই কেমন যেন চারপাশ থেকে ভেসে আসে পিকনিকের গন্ধ। ঘুরতে যাওয়ার কথা বললেই যে সব সময়ে লোটাকম্বল গুছিয়ে দূরে ঘুরতে যেতে হবে, এমনটা কিন্তু নয়। হাতের কাছেই এমন অনেক জায়গা আছে, শুধু দুচোখ মেলে দেখা হয়নি বলে নতুন প্রজন্ম তার নাগাল পায়নি।
কলকাতা থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টা দূরত্বে রয়েছে পানীহাটি শহর। শহর বললে ভুল হবে, পানিহাটি হল প্রাচীন একটি জনপদ। সংস্কৃত নাম পুণ্যহট্ট থেকে এই জায়গার নাম হয় পানিহাটি। ১৮৭২ সালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সপরিবার পানিহাটি এসেছিলেন রবি ঠাকুর। টানা প্রায় ৪৮ দিন গঙ্গার ধারের ছাতুবাবুর বাগানবাড়িতে এসে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর জীবনস্মৃতি বইয়ে এই পেনেটি বাগানবাড়ির উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে সোদপুর স্টেশনের গায়েই গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত প্রাচীন খাদি প্রতিষ্ঠান।
পানিহাটির মোচ্ছবতলার গঙ্গার সেই ঘাটে প্রতি বছর যে চিঁড়ের মেলা হয়, তার শুরুটা হয়েছিল একটি দণ্ড বা শাস্তিকে কেন্দ্র করে। শ্রীনিত্যানন্দ সপ্তগ্রামের জমিদারকে কৃপাদণ্ড দেন যে বৈষ্ণবভক্তদের দই-চিঁড়ে সেবন করাতে হবে। এই ভাবেই দণ্ডমহোতসবের সূচনা। চৈতন্যদেব পুরীধাম থেকে ফেরার পথে এখানে এক বার বিশ্রামও নেন। বেশ কিছু দিন রাঘব পণ্ডিতের বাড়িতে বাসও করেছিলেন। এই সব নানা কারণে বৈষ্ণব ভক্তদের কাছেও এই স্থানের মাহাত্ম রয়েছে।
চৈতন্যচরিতান্মৃতেও উল্লেখ রয়েছে পানিহাটির। কাছেই ইস্কনেরও একটি সুন্দর মন্দির আছে। ইস্কনের মন্দির ছাড়িয়ে ত্রাণনাথ ঘাটের পাড়েই শান্ত-নিরিবিলি পরিবেশে শিব-কালী পঞ্চরত্ন মন্দিরটির গঠনশৈলীও খুব ভাল লাগবে।
ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত গঙ্গা তীরবর্তী এই পানিহাটি বিখ্যাত মা ভবানী কালী মন্দির। এ ছাড়াও রয়েছে ৩২৫ বছরের পুরনো হলদে কালীবাড়ি, রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত গোবিন্দ হোম, ৫০০ বছরের পুরনো বিখ্যাত চিঁড়েদধি উৎসবতলা, বারো শিব মন্দির, পানিহাটি ইস্কন মন্দির ইত্যাদি। তাই একবেলা ঘুরে আসা যেতেই পারে পুণ্যভূমি পানিহাটি থেকে।
কোথায় পিকনিক করতে পারেন?

বড়দিন এবং নতুন বছর উপলক্ষে পর্যটকদের জন্য সেজে উঠছে নিহার অন দ্য গ্যাঞ্জেস বাগানবাড়িটি। গঙ্গার ধারের এই বাড়িটিতে চাইলে এক রাত কাটিয়েও আসতে পারেন, মন্দ লাগবে না। সে ক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি। ঘর ভাড়া ৭,৮০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত। খাওয়ার খরচ আলাদা। কিন্তু যদি সদলবলে এক দিনের জন্য পিকনিক করে আসতে চান, তা-ও পারেন। এক দিনের জন্য খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১,৭০০ টাকার মতো। এই বাগানবাড়িতে থাকলে বিকেলে টোটো করে ঘুরে আসতে পারেন আশপাশটা। তবে এই সময় ভিড় থাকে, তাই আগে বুকিং করে রাখতে হবে।