চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জারিআমিরাতে বৃষ্টিতে গাড়িতে আটকা পড়ে মারা গেলেন দুই জন সেরেলাক-নিডোয় অতিরিক্ত চিনি, পরীক্ষা করবে বিএফএসএজাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ আটকে দিল যুক্তরাষ্ট্রভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট শুরু
No icon

কর রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট

দেশ ও অর্থনীতির অর্ধশতবর্ষ পূর্তির এই প্রান্তিক পর্যায়ে এসেও রাজস্ব আয় অর্জনে আমরা যে এখনো একটা পুশ ফ্যাক্টরের ভেতরে আছি তা বুঝতে কষ্ট হয় না। অর্থাৎ রাজস্ব আহরণকে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে উন্নীত করার জোর চেষ্টা চলছে তো চলছে। বিপুলসংখ্যক করদাতা এখনো করজালের আওতায় আসতে পারেননি, আনা যায়নি। অন্যদিকে সঠিক পরিমাণে কর ও শুল্কায়নযোগ্য যে খাতগুলো বাদ পড়ে গেছে বা বাইরে আছে সেগুলোকে শুল্ক ও করের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই পরিশীলিত, সংস্কারকৃত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হয়ে একটা করদাতাবান্ধব ও স্বয়ংক্রিয় প্রণোদনামূলক পদ্ধতি গড়ে তোলা বা প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। অর্থাৎ কর যাঁরা দেন না তাঁদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি কর প্রদানে যাঁরা ফাঁকি দিচ্ছেন বা এড়িয়ে যাচ্ছেন তাঁদের প্রতি কঠোর ও কঠিন মনোভাব পোষণ এবং সর্বোপরি কর প্রদান ও আহরণের সংস্কৃতিকে জাতীয় দায়িত্ব বোধের চেতনায় উত্তরণ ঘটানোর কাজে ক্লান্তির প্রহর যেন শেষ হচ্ছে না। করদান ও আহরণের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা বা জটিলতাসহ স্পর্শকাতরতা রয়েছে, তা দূর করে কার্যকর অবস্থায় নিয়ে আসতে সেই ৯০-এর দশক থেকেই চেষ্টা চলছে। ৯০ দশক পর্যন্ত আমদানি বাণিজ্যনির্ভর অর্থনীতির সময়ে নিজস্ব উৎপাদনব্যবস্থা তেমন ছিল না বলে তখন আমদানি শুল্ক ব্যতিরেকে কর ও ভ্যাট রাজস্ব আহরণের আবশ্যকতা দেখা দেয়নি।

 

৯০-এর দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি যখন ট্রেডিং নির্ভরতা থেকে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের দিকে অগ্রসরমাণ হয় তখন থেকেই শুল্কের চেয়ে করের কলেবর বৃদ্ধি পেতে থাকে। রেমিট্যান্সের পাশাপাশি পোশাকশিল্পের হাত ধরে আমাদের রপ্তানি আয় ও উন্নয়ন বেড়ে গেলে এবং আমদানি ব্যয় হ্রাস পেতে থাকলে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহসংক্রান্ত বিষয়াদি নতুন করে জাতীয় ভাবভাবনার চৌহদ্দিতে চলে আসে। অন্যদিকে ৯০ দশকের শুরুতেই রুশ ফেডারেশনের পতনে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়। তখন উন্নয়নশীল দেশগুলোর আগের মতো বিদেশি ঋণ অনুদানপ্রাপ্তির সুযোগ এবং সম্ভাবনা হ্রাস পায়। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই বাংলাদেশের মতো অনুন্নত অথচ উন্নয়ন আগ্রহী দেশে নিজস্ব রাজস্ব আহরণের গুরুত্ব বেড়ে যায়।রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে ও পদ্ধতি প্রক্রিয়ায় আইনসংগত স্বচ্ছতার আলোকে গতিশীলকরণের স্বার্থে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আইন ও প্রক্রিয়ার যৌক্তিকতা যথা বিশ্লেষণ হওয়া উচিত। বিশেষ করে কর আহরণ প্রক্রিয়ার যেসব আইনি জটিলতা সেটা ঠিকমতো সংস্কারের মাধ্যমে স্পষ্ট করা না গেলে সমস্যা থেকেই যাবে। অন্তত এ অবস্থায় রেখে ব্যাপক কর আদায়ের যে কথা চিন্তা করা হচ্ছে তা অর্জন স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্ভব হবে না। এ ক্ষেত্রে আইনের আর্থ-প্রশাসনিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে যদি আরো কিছু অসম্পূর্ণতা ও ফাঁকফোকর থেকে থাকে তা সংশোধন করা না গেলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর কর্তৃপক্ষের নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।