NEWSTV24
দারিদ্র্য কমাতে আসছে বিশেষ কর্মসূচি
শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২২ ১৫:৪৬ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সহসভাপতি হার্টউইগ সেফার ২০২০ সালে ঢাকা সফরে এসে বলেছিলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে রোল মডেলের এই সুনাম অনেকটাই ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় দারিদ্র্য বিমোচনে নতুন করে প্রণোদনা দেবে সরকার, যা আগামী অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। জানা গেছে, মহামারীর আগে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু মহামারীতে বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়ায় এ হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশে। অর্থাৎ দেশে বর্তমানে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৯ লাখ। এর মধ্যে মহামারীতে গত এক বছরে নতুন দরিদ্র হয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ।যদিও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলসহ (সানেম) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, মহামারীর কারণে নতুন করে দরিদ্র হওয়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২ থেকে আড়াই কোটি। অবশ্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রতিবেদনে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, কোভিডের কারণে ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্রের কাতারে নেমেছে।অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজমা মোবারক আমাদের সময়কে বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে সরকার আন্তরিক। আগামী বাজেটে এজন্য বিশেষ বরাদ্দ থাকবে।জানা গেছে, বিপুল ভর্তুকির চাপ কমাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরও যাতে জীবনযাত্রায় মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সেজন্য কৃষক ও কর্মহীন দরিদ্রদের জন্য পৃথক প্রণোদনা প্যাকেজ এবং ওএমএস বিতরণের পরিকল্পনা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে দারিদ্র্যের হার ৩০ শতাংশের বেশি- এমন ৬০ উপজেলার দরিদ্র কর্মহীনদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচিতে পৃথক প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ৯ হাজার ২০০ সারে, জ্বালানিতে ৪ হাজার ও বিদ্যুতে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রয়েছে। সব মিলিয়ে ভর্তুকি বরাদ্দ রয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় চলতি বাজেটে জ্বালানি তেল, এলএনজি ও সারে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াবে ৭০ হাজার কোটি টাকা।অর্থ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর ইউরিয়ায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকাসহ সারে মোট ভর্তুকি দাঁড়াবে ২৫ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া এলএনজি আমদানিতে ১০ হাজার কোটি টাকা ও বিদ্যুতে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এদিকে জ্বালানি বিভাগ এলএনজি আমদানি অব্যাহত রাখতে অর্থ বিভাগের কাছে ৯ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে গত নভেম্বরে চিঠি দিয়ে পেয়েছে মাত্র ১ হাজার কোটি টাকা।এ ভর্তুকির লাগাম টানতে মূল্য সমন্বয় করা হলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দেশের যে ৬০টি উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ৩০ শতাংশের ওপর, সেসব অঞ্চলে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণের কথা ভাবছে সরকার। অতি দারিদ্র্যপ্রবণ এসব অঞ্চলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন করবে এমন একটি লক্ষ্যভিত্তিক প্রণোদনা প্যাকেজ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বা তার বেশি হলে সারাদেশে সীমিত সময়ের জন্য ওএমএস কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের।