NEWSTV24
এলসির নামে ১৬ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ
সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২ ১৬:৩৬ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের নন ফান্ডেড বিনিয়োগে (ঋণ প্রদানে) বড় ধরনের অনিয়ম ধরা পড়েছে। অর্থের পরিমাণ বিবেচনায় এটি বহুল আলোচিত হলমার্ক, বিসমিল্লাহ, ক্রিসেন্ট, অ্যাননটেক্স ও নাবিল গ্রুপের কেলেঙ্কারিকেও ছাড়িয়ে গেছে। স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক বন্ডেড ওয়্যারহাউসের লাইসেন্সবিহীন অখ্যাত দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৯ কোটি ১৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩৯২ ডলারের ব্যাক টু ব্যাক এলসি সুবিধা দিয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা)।এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক একক গ্রাহকের যে সীমা রয়েছে তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। শুল্ক সুবিধাভুক্ত ব্যাক টু ব্যাক এলসির ক্ষেত্রে পণ্য রপ্তানির বাধ্যবাধকতা থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কোনো পণ্যই রপ্তানি হয়নি। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানের কারখানায় অনুসন্ধান চালিয়ে পাওয়া যায়নি আমদানিকৃত কাঁচামাল কিংবা কাঁচামাল থেকে প্রস্তুত কোনো পণ্যের মজুদ পর্যন্ত।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক পরিদর্শনে বড় ধরনের এমন অনিয়ম ধরা পড়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ না থাকলে এত বড় অনিয়ম সম্ভব নয়, বলছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এ কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকের পাশাপাশি কাস্টমস গোয়েন্দা বিভাগকেও চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।রপ্তানি খাতের যে দুটি প্রতিষ্ঠানকে এ বিপুল অংকের ঋণ দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- শার্প নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ব্লাইথ ফ্যাশন লিমিটেড। দুটি প্রতিষ্ঠানই গাজীপুরে অবস্থিত। এর মধ্যে প্রথমটি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বনানী শাখার এবং দ্বিতীয়টি মিরপুর শাখার গ্রাহক।ফান্ডেড ঋণ বলতে ব্যাংক থেকে সরাসরি টাকা দেওয়াকে বোঝায়। আর নন-ফান্ডেড বলতে এলসি, গ্যারান্টিসহ বিভিন্ন দায়কে বোঝানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী, কোনো ব্যাংক ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে তাদের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ কোনো কোম্পানি বা গ্রুপকে দিতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে এ নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠান দুটি বন্ধ আছে। ফলে ব্যাংকটির এ অর্থ আদায়ে মারাত্মক অনিশ্চয়তা রয়েছে। যদিও ব্যাংকটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এসব বিনিয়োগের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত রাখা আছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, এ দুটি প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের পাশাপাশি সরকারি সুবিধায় শুল্কছাড়ের অপব্যবহার করেও বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি। আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, বড় অংকের এ টাকার একটা অংশ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।