NEWSTV24
পাহাড় ছেড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গিরা
মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩ ১৬:১৩ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

কথিত হিজরতের উদ্দেশে ঘর ছেড়ে পালানো তরুণদের খোঁজে বেশ কিছু দিন ধরে পাহাড়ে ধারাবাহিক অভিযান চলছে। এরই মধ্যে অনেকে গ্রেপ্তার হন। তবে এখনও ধরা পড়েননি অন্তত ৪০ তরুণ। বান্দরবান ও রাঙামাটির গহিন পাহাড়ে অভিযানের মুখে দুর্ধর্ষ জঙ্গিরা কক্সবাজারে আত্মগোপন করছেন ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। গতকাল সোমবার ভোর থেকে কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চিরুনি অভিযান চালায় র;্যাব। অভিযানের খবর পেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালানোর সময় নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকস্ফীয়া র সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান মাসুদ ওরফে রনবীর ও বোমা বিশেষজ্ঞ আবুল বাশার মৃধাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই প্রথম উগ্রপন্থি সংগঠনের সদস্যদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পে অভিযান চালানো হলো।র ;্যাব জানায়, নিখোঁজ তরুণদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, সেখানে মাদারীপুরের বাশারের নাম ছিল। এক সময় তিনি হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজিবি) নেতা ছিলেন। আর রনবীর জামা আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার দু জন এর আগে কারাগারে ছিলেন। পরে জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। বেশ কিছুদিন ধরেই নতুন জঙ্গি সংগঠনে ভিড়েছেন তাঁরা।

র;্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে গোয়েন্দা তথ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে, রনবীর ও বাশার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে কুতুপালং সাত নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ ব্লক ঘিরে সোমবার ভোর ৫টায় যৌথ চিরুনি অভিযান শুরু করে র;্যাব। র;্যাবের অবস্থান বুঝতে পেরে জঙ্গিরা পাশের পাহাড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। অভিযান শুরু করলে র;্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। আত্মরক্ষার্থে র;্যাব সদস্যরা পাল্টা গুলি চালান। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে দুই জঙ্গি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।কেন জঙ্গিরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্মগোপন করল- এমন প্রশ্নে মঈন বলেন, কেউ তাদের আশ্রয় দিয়েছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই চক্রের আরও কোনো আলামত মিললে অভিযান জোরদার করা হবে। রোহিঙ্গাদের জঙ্গি সংগঠনে রিক্রুট করার কোনো পরিকল্পনা ছিল কিনা তাও দেখছি।র;্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাশার জানান, গত ৩ অক্টোবর র;্যাব এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান শুরু হওয়ার পর তিনি ৫৫ তরুণের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাহাড় থেকে পালিয়ে সিলেটে যান। এর পর সামরিক শাখার প্রধান রনবীরের কাছে আশ্রয় নেন। তাঁরা বেশ কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্মগোপন করেন।

র;্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবারের অভিযানে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৩টি ম্যাগাজিন, ১০ রাউন্ড গুলি, ১টি কার্তুজ, ২টি একনলা বন্দুক, ১১টি ১২ বোরের কার্তুজ, ১টি খালি খোসা, ১০০ রাউন্ড পয়েন্ট ২২ বোরের গুলি, ১টি মোবাইল ফোন ও নগদ ২ লাখ ৫৭ হাজার ২৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়। র;্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র;্যাব-২, র;্যাব-৩ এবং র;্যাব-১৫ এর সদস্যরা যৌথ চিরুনি অভিযানে অংশ নেন।র;্যাব বলছে, ২০ অক্টোবর বান্দরবান ও রাঙামাটির বিলাইছড়ি থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পাহাড়ে আত্মগোপন করা ৭ জঙ্গি এবং তাঁদের ৩ সহায়তাকারী কেএনএফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আসামিদের বিরুদ্ধে বিলাইছড়ি থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ৭ আসামির মধ্যে নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকস্ফীয়া র সামরিক শাখার উপপ্রধান সৈয়দ মারুফ আহমেদ মানিক ছিলেন। মারুফকে জিজ্ঞাসাবাদে সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান রনবীরের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। ওই তথ্যের ভিত্তিতে র;্যাব দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।