সর্বশেষ ২ ফেব্রুয়ারি এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নতুন করে নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৪৯৮ টাকা। কিন্তু দেশের অধিকাংশ এলাকায় দুই থেকে তিনশ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে।দেশের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলপিজি সিলিন্ডারের ডিলার ও দোকানদাররা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরের বাসিন্দা কাজি রাকিবুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে ১২ কেজির সিলিন্ডারের সরকার নির্ধারিত দাম ছিল এক হাজার ২৩২ টাকা। কিন্তু কিনতে হয়েছে ১৪শ টাকায়। বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য দিতে হয়েছে আরও ৫০ টাকা।মুন্সীগঞ্জের ভবের চরের বাসিন্দা দাদন হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম যখন এক হাজার ২৩২ টাকা ছিল, তখন তিনি ১৫শ টাকা দিয়ে সিলিন্ডার কিনেছেন। দাদন হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম আমরা জানি। তবে কোনো দোকানদার সেই দামে বিক্রি করেন না। এসব নিয়ে অভিযোগ দিয়েও লাভ নেই। অযথা ঝামেলা হয়। দোকানদারদের শত্রু হতে হয়। এমনকি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে গ্যাস না পাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।শুধু নারায়ণগঞ্জ বা মুন্সীগঞ্জ নয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামে কেউ সিলিন্ডার বিক্রি করছেন না। অতিরিক্ত দাম নেওয়ার বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। কোথাও দাম বেশি রাখলে তা দেখভালের দায়িত্বও কমিশনের। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন বা স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করা আছে। কেউ দাম বেশি রাখলে তারা ব্যবস্থা নেবে।
বিইআরসি নির্ধারিত ফেব্রুয়ারি মাসের দাম অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম হওয়ার কথা ১৪৯৮ টাকা। বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা। ১২ কেজির চেয়ে বড় সিলিন্ডারের দামও নেওয়া হচ্ছে বেশি। খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে দামের এ তারতম্য পাওয়া গেছে।২০১৩ সাল থেকে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। মূলত এরপর থেকে এলপি গ্যাসের চাহিদা বাড়তে থাকে। আগে এলপি গ্যাস কোম্পানিগুলো নিজেরাই দাম নির্ধারণ করত। গত ১০ মাস ধরে বিইআরসি প্রতি মাসের শুরুতে দাম নির্ধারণ করে দেয়। আর প্রতিবারই কমিশনের কাছে বেশি দাম রাখার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে কমিশন প্রায় একই কথা বলে- অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কমিশনের নাম প্রকাশে এক অনিচ্ছুক এক সদস্য আমাদের সময়কে বলেন, এলপি গ্যাসের দাম কমিশন ঠিক করে দেয়। কিন্তু কেউ বেশি দাম নিলে কমিশন কিছু করতে পারে না। কারণ কমিশনের পর্যাপ্ত লোকবল নেই। জেলা প্রশাসক বা স্থানীয় প্রশাসন এগুলো নজরদারি করার কথা। তবে বাস্তবতা হলো, স্থানীয় প্রশাসন নানা কাজে এত ব্যস্ত যে তারা এতে গুরুত্ব দেয় না।