আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসএপ্রিলে ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টি অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টিবজ্রসহ শিলা বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে আজ শুরু হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন
No icon

সামনে তাপমাত্রার চাপ সামলানো হবে কঠিন

তামাম বিশ্বে বাড়ন্ত তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার এক লড়াই চলছে। তবে সেই প্রচেষ্টা থেকে পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ। গত ২০ বছরে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ধারা চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রির বেশি বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। আরও ভয়ানক তথ্য হলো যদি তাপমাত্রার লাগাম টানা না যায়, তাহলে ঢাকাসহ চারটি বড় নগর আগামী কয়েক বছরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।গবেষকরা বলছেন, তাপ এমন বল্গাহীন হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে রাত ও দিনের তাপমাত্রার তারতম্য কমে আসবে। ফলে সব সময় গরম অনুভূত হবে। জলবায়ু ও পরিবেশগত পরিবর্তন ছাড়াও জনসংখ্যা ও ঘনত্ব এবং মানুষের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করে কোন স্থানের তাপমাত্রা কেমন হবে। তাপমাত্রা বাড়ার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন যতটা দায়ী, তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নগরে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা। প্রধানত বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় এ তিন কারণে ঢাকা নগরের তাপমাত্রা বাড়ছে বলে মনে করেন গবেষকরা।

বাড়বে বিপদ

স্বাধীনতার আগে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯৬০ সালে। ওই বছরের ৩০ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৫৪ বছর পর ২০১৪ সালের ১৪ ও ২৩ এপ্রিল, ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় একই তাপমাত্রা আবার রেকর্ড করা হয় ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল। ঢাকার তাপমাত্রা আগের সেই রেকর্ড এখনও স্পর্শ করেনি, তবে জীবনযাত্রা তাতেই অসহনীয় ঠেকেছে। যতটা তাপ, এর চেয়ে অনুভূত হচ্ছে বেশি। গতকাল সোমবার ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর তাতেই নাভিশ্বাস তুলেছে নগরজীবনে। পুরো নগর একরকম স্থবির। গরমে টিকতে না পেরে মারা গেছেন এক রিকশাচালক।গত ২৯ মার্চে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী আরবান ক্লাইমেট-এ চেঞ্জেস ইন হিউম্যান ডিসকমফোর্ট অ্যান্ড ইটস ড্রাইভার ইন বাংলাদেশ শিরোনামের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ছয় দশকে শুধু ঢাকায় তীব্র এবং অসহনীয় গরমের দিনের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। ১৯৬১ সালে ঢাকায় সারাবছরে আরামদায়ক দিনের সংখ্যা ছিল ৮০। আর প্রচণ্ড গরমে কষ্টকর দিনের সংখ্যা ছিল ৭। ২০২০ সালে আরামদায়ক দিনের সংখ্যা কমে ৬৬ এবং কষ্টকর দিন বেড়ে হয়েছে ২১।


আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড বলছে, গত ছয় দশকে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। এ ধারা থাকলে আগামী তিন দশকে তাপমাত্রা বাড়ার এই পরিমাণ ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে আবহাওয়াবিদদের ধারণা।আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ১৯৬০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আমাদের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্থানবিশেষে এর পরিবর্তন আসতে পারে। ঠিক তেমনিভাবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বেড়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে গড় তাপমাত্রা এ অঞ্চলে শূন্য দশমিক ৭ থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়ার পাশাপাশি মহানগর এলাকায় তাপপ্রবাহের প্রবণতাও বেড়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা দিচ্ছে ঘন ঘন, ধরনও বদলাচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৫ সালের পরে তাপমাত্রা বাড়ার হার স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি।