দুর্নীতি ও লুটপাট লুকিয়ে রাখতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : রুহুল কবির রিজভীবাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পিঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারততাপপ্রবাহের মধ্যেই আজ খুলছে স্কুল-কলেজযুদ্ধবিরতি সম্পর্কে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পেলো হামাসঝুম বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলো সিলেটে
No icon

ঝুঁকিতে দেড় লাখ কোটি টাকার ঋণ

খেলাপি ঋণ কমছেই না। বরং উদ্বেগজনক হারে বিপৎসংকেত দিয়েই যাচ্ছে। মার্চ পর্যন্ত তথ্য ধরলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৫ হাজার কোটি টাকা, যা জুন প্রান্তিকে নির্ঘাত লাখ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।কিন্তু মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়ে পিছু নিয়েছে বিপুল অঙ্কের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ। বর্তমানে এমন ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। খেলাপি হওয়ার আগের ধাপে থাকা এসব ঋণগ্রহীতা যদি সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করেন, তাহলে তা খেলাপি ঋণের হিসাবে যুক্ত হয়ে যাবে। সেটি হলে ব্যাংকিং সেক্টরসহ পুরো অর্থনীতির জন্য বড় দুঃসংবাদ বয়ে আনবে। এমনটিই বলছেন বিশ্লেষকরা।ব্যাংকিং খাতে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টে (এসএমএ) ঋণের অঙ্ক বেড়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি। এ কারণে এই ঋণের অঙ্ক প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এছাড়া শিল্প খাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণও লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ রিপোর্টে উঠে এসেছে এমন উদ্বেগজনক তথ্য।জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বিআইবিএম-এর সাবেক মহাপরিচালক ড. মইনুল ইসলাম সোমবার বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ের খুব বেশি সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ খেলাপির বেশির ভাগ টাকাই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। ধরতে চাইলে এসব ঋণখেলাপি বিদেশে পালিয়ে যান। কারণ তারা সেখানে বাড়ি-গাড়ি. অট্টালিকা গড়েছেন। এসব প্রভাবশালী ঋণখেলাপি থেকে প্রচলিত আইনে টাকা আদায় করা যাবে না। তাদের ধরতে হলে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ ১০ খেলাপিকে গঠিত ট্রাইব্যুনালের আওতায় বিচার করতে হবে। তাদের সম্পদ ক্রোক করতে হবে। কোনো ধরনের আপিলের সুযোগ দেওয়া যাবে না।তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এখন হয়তো বা বিনিয়োগ নেই। ওদিকে ব্যাংকে টাকাও আছে। তাই আসল সংকটটা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু বিনিয়োগ পরিবেশ ফিরে এলে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে খেলাপি ঋণ। দেখা দেবে মহাসংকট।ব্যাংক খাতের নিয়মানুযায়ী কোনো ঋণের ৮টি কিস্তি অনাদায়ি থাকলে সেই ঋণকে এসএমএ হিসাবে গণ্য করা হয়। আর যে ঋণের কিস্তি নির্ধারিত তারিখে পরিশোধ করা হয় না, সেই ঋণকে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বলা হয়। মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঋণ ৯ মাস থাকার সুযোগ রয়েছে। এ সময়সীমা অতিক্রম করলেই খেলাপি হবে। নানা ধাপে উল্লিখিত দেড় লাখ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে যাওয়ার বিষয়টি ঋণখেলাপির আগের ধাপ।বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টে (এসএমএ) ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ১০৪ কোটি টাকা, যা তিন মাস আগে অর্থাৎ গত ডিসেম্বরে ছিল ৪৪ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে এসএমএ মানের ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। আর ২০২০ সালের মার্চে ছিল ৪৬ হাজার ৮৩২ কোটি টাকার এসএমএ ঋণ। বছরের ব্যবধানে এসএমএ ঋণ বেড়েছে ২৭২ কোটি টাকা।