এফডিসির ঘটনায় ডিপজল-মিশা সওদাগরের দুঃখ প্রকাশপ্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেনগরমের তীব্রতা কমাতে কী কাজ করেছেন, জানালেন হিট অফিসারবিনা ভোটে নির্বাচিত ৩৩ প্রার্থীসব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে
No icon

তিতাসের গ্যাসলাইন যেন ওত পাতা বিপদ

পুরোনো লাইনের পাশাপাশি অবৈধ সংযোগ, আছে নিম্নমানের পাইপের ব্যবহার। রক্ষণাবেক্ষণেরও নেই ঠিক। অপরিকল্পিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলে বছরজুড়ে। সব মিলিয়ে তিতাসের গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্ক বিপৎসংকুল। যেন তাসের ঘর । জীর্ণ লাইনের পাইপ ফেটে গ্যাস বেরিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, বিকট শব্দে বিস্ফোরণ। নিভে যাচ্ছে মানব প্রাণ। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গেল পাঁচ বছরে তিতাসের আওতাধীন এলাকায় গ্যাস পাইপলাইনজনিত ১৪ দুর্ঘটনায় ৫৮ জনের জীবন গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিতাসের তদারকি না থাকায় রাজধানী ও আশপাশের গ্যাস বিতরণ লাইন হয়ে উঠেছে মৃত্যুফাঁদ। পাইপলাইনের লিকেজের বিষয়ে জানানো হলেও সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যদিও তিতাসের দাবি, অভিযোগ পেলে লাইন সংস্কার করা হয়।

গত সপ্তাহে রাজধানীতে ঘটে দুটি বড় বিস্ফোরণ। তদন্ত সংস্থাগুলোর দাবি, জমে থাকা গ্যাস থেকে ঘটেছিল ওই বিস্ফোরণ। যদিও তিতাস এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ মোল্লাহ জানিয়েছেন, তাঁদের তদন্ত দল সিদ্দিকবাজারের ঘটনাস্থলে কোনো গ্যাস লিকেজের আলামত পায়নি। সায়েন্স ল্যাবের ঘটনাও গ্যাস লিকেজ থেকে নয় বলে দাবি করেন তিতাস এমডি।জানতে চাইলে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, নারায়ণগঞ্জের দুর্ঘটনাকে বলা যেতে পারে তিতাসের লোভের বলি। সংস্থাটির ওপর-নিচের অনেকেই দুর্নীতিতে জড়িত। যতই ঝুঁকিপূর্ণ হোক না কেন, ঘুষ দিলেই অবৈধ গ্যাস সংযোগ মেলে। জরাজীর্ণ লাইন মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই। সবার নজর শুধু অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে টাকা কামানোয়। ফলে রাজধানীর গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থা ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।

যেভাবে দুর্ঘটনা: সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাকৃতিক গ্যাসের অন্যতম উপাদান মিথেন। কক্ষে আবদ্ধ গ্যাস বৈদ্যুতিক স্পার্ক বা আগুনের সংস্পর্শে এলে বিস্ফোরিত হয়। বাসাবাড়ির লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভবনের ভেতরে গ্যাস জমা হতে পারে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের পাথরঘাটার একটি বহুতল ভবনের ভেতরের পাইপলাইনের মরিচা ধরা অংশ লিকেজ হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যান সাতজন। বিতরণ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পয়ঃনিষ্কাশন লাইনের মধ্য দিয়ে গ্যাস বদ্ধ কোনো স্থানে জমতে পারে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের তদন্ত বলছে, ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই ঢাকার মগবাজার মোড়ে একটি খাবারের বেসিনের পাইপ ফুটপাতের ড্রেনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ড্রেনে থাকা পাইপলাইন লিকেজ হয়ে গ্যাস বেসিনের পাইপ দিয়ে বদ্ধ ঘরে জমা হয়। লাইটের সুইচ দেওয়ার সময় আগুনের স্পর্শে বিস্ফোরণ ঘটে, এতে তিনজন আহত হন। গ্যাসের চুলা ঠিকমতো বন্ধ না করলে বা ত্রুটিপূর্ণ সুইচ থেকে বদ্ধ ঘরে গ্যাস জমে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯ সালে ঢাকার লালমাটিয়ার একটি আবাসিক ভবনে এমন ঘটনা ঘটে। চুলা ঠিকমতো বন্ধ না করা কিংবা পুরোনো সুইচের কারণে গ্যাস লিকেজ করে আবদ্ধ কক্ষে জমা হয়। জ্বলন্ত মোমবাতি নিয়ে ওই কক্ষে প্রবেশের সময় দুর্ঘটনা ঘটে।