সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি যেসব অঞ্চলেবিশ্ব ধরিত্রী দিবস আজপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: সংশোধিত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৪৬ হাজারসকালের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস
No icon

অর্ধশতাধিক আসনে ইভিএমে ভোট

প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় আগামী সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় সংসদের ১৫০ আসনের পরিবর্তে অর্ধশতাধিক আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। সংসদীয় আসন মোট ৩০০।রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিরোধিতা করে আসছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বেশ কয়েকটি দল এর পক্ষে।রাজনৈতিক আপত্তি আমলে না নিলেও আর্থিক সংকটে শেষ পর্যন্ত আটকে গেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বহুল আলোচিত ইভিএম প্রকল্প। নতুন করে আর ইভিএম কেনা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। গতকাল সোমবার পরিকল্পনা কমিশন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা ইসিকে জানিয়ে দেওয়া হয়।এর পরপরই ইসি সচিব জাহাংগীর আলম গণমাধ্যমের সামনে এ তথ্য তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব তিনি বলেন, কমিশনের হাতে যে ইভিএম আছে, আগামী নির্বাচনে সেগুলো ব্যবহার করা হবে। তিনি জানান, কমিশন বলেছিল, নতুন মেশিন পেলে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট হবে। নতুন ইভিএম না পেলে ২০১৮ সালের ইভিএম দিয়ে যত আসনে সম্ভব, ভোট হবে। সে সিদ্ধান্ত বহাল আছে। কমিশনের হাতে অন্তত দেড় লাখ ইভিএম রয়েছে। তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবহারযোগ্য ইভিএম দিয়ে ৫০-৭০ আসনেও ভোট হতে পারে।

জানতে চাইলে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নতুন ইভিএম মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ, ইভিএম নামক যন্ত্রটি খুবই নিম্নমানের। এটি দিয়ে জালিয়াতি করা যায়। বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার মতো অবস্থা। জনগণ এটি চায় না। তার পরও ৫০-৬০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করার কথা বলছে ইসি। আমরা বলব, এমনিতে নির্বাচন কমিশন আস্থার সংকটে রয়েছে। এ আসনগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করলে আস্থা বাড়বে না, বরং আরও কমবে। সংকট আরও ঘনীভূত হবে। বিতর্ক আরও বাড়বে। আমাদের অনুরোধ, আস্থার সংকট দূর করুন। বিতর্ক আর না বাড়িয়ে অবসানের চেষ্টা করুন। এ জন্য কোনো আসনেই ইভিএম ব্যবহার না করতে ইসির প্রতি অনুরোধ করব।তবে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান বলেছেন, তাঁরা দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঁচ শতাধিক নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে। কোথাও অভিযোগ ওঠেনি। অনেক সময় সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব হয় না। অর্থনৈতিক কারণেই দেড়শ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে তাঁদের সরে আসতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা পূরণ হলো। বিশিষ্ট নাগরিকদের যে ইচ্ছা ছিল, সেটাও বাস্তবায়িত হলো। এখন আমরা মনে করি, দল-মত নির্বিশেষে বর্তমান সিদ্ধান্ত পছন্দ করবে। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে এবং সহযোগিতা করবে। ইভিএমের পাশাপাশি ব্যালটেও নির্বাচন যে অবাধ ও সুষ্ঠু করা সম্ভব, সেটা প্রমাণ করব ইনশাআল্লাহ।বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় সব মহল থেকেই সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইসির ওপর চাপ বাড়তে থাকে। এসব চাপ মোকাবিলায় ইসি ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ব্যবহার এবং ব্যালটের পরিবর্তে ইভিএমে ভোট নেওয়ার কথা জানায়। নিকট অতীতে অনুষ্ঠিত একাধিক জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ওঠা নানা অনিয়মের অভিযোগের জবাব দিতে এ দুটি বিষয়কে অনেকটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তারা। যদিও ইভিএমে ভোট গ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল বিতর্ক রয়েছে। ইভিএমের বিরুদ্ধে ঘোরতর আপত্তি জানিয়ে আসছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ জোটের অন্যান্য দল। আবার অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বিপুল অর্থ ব্যয়ে ইভিএম কেনা ও এর পেছনে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন ছিল।কিন্তু গতকাল সরকারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুই লাখ নতুন ইভিএম কিনতে ইসির ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব আপাতত অনুমোদন পাচ্ছে না।