দুর্নীতি ও লুটপাট লুকিয়ে রাখতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : রুহুল কবির রিজভীবাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পিঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারততাপপ্রবাহের মধ্যেই আজ খুলছে স্কুল-কলেজযুদ্ধবিরতি সম্পর্কে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পেলো হামাসঝুম বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলো সিলেটে
No icon

মানা হচ্ছে না ইসির নির্দেশ ও আইন

পরিবেশবিদদের মতে, একটি পলিথিন বা প্লাস্টিকজাত দ্রব্য পচতে ৩০০ থেকে ৪০০ বছর লেগে যায়। তাই পলিথিন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তা ছাড়া পলিথিন নালা-নর্দমায় আটকে থাকার কারণে বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। পলিথিন পোড়ালেও বাতাস দূষিত হওয়ার শঙ্কা থাকে। তাই পলিথিন যে রূপেই ব্যবহার হোক তা পরিবেশের ক্ষতি করে। এ জন্য আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচারে পলিথিনসহ সব ধরনের প্লাস্টিকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তা ছাড়া পলিথিন ব্যবহার বন্ধে সুনির্দিষ্ট আইনও রয়েছে। এমনকি এ বিষয়ে হাইকোর্টের কঠোর নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেশির ভাগ প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। ফলে সর্বত্রই প্লাস্টিক ও পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও কার্ড দেখা যাচ্ছে।জনগণের স্বার্থ দেখার জন্যই জনপ্রতিনিধি। তাই তাদের ভাবনাতেও জনস্বার্থ থাকাটা জরুরি বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা। তাদের মতে, জনগণের ভোটে যারা জনপ্রতিনিধি বা আইনপ্রণেতা হবেন, তাদের সবার আগে জনগণের স্বার্থের কথাটি বিবেচনায় নিতে হয়। কোন কাজটি করলে জনস্বার্থ রক্ষা হবে আর কোন কাজটি করলে জনস্বার্থ বিঘ্নিত হবে এসব বিষয় যারা বিবেচনা করতে পারেন না, তাদের আর যাই হোক জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা নেই। জনগণের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের স্বার্থকে যারা প্রধান করে দেখে, তাদের কাছে ভালো কিছু আশাও করেন না পরিবেশবিদরা।

গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সংসদ নির্বাচনের প্রচার শুরু হয়। সেদিন থেকেই রাজধানীর অলিগলি পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে যায়। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশেই শহর, নগর, বাজার হাট এখন পোস্টারে ছেয়ে গেছে। কাগজের পোস্টার পাশাপাশি পলিথিনে মোড়ানো পোস্টারও রয়েছে। শীত মৌসুম হওয়ায় ঘন কুয়াশায় পোস্টার ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রার্থীরা পোস্টার রক্ষার্থে ও নিজের প্রচারের স্বার্থে পলিথিন ব্যবহার করছেন।নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা থাকলেও মাঠপর্যায়ে তদারকি না থাকায় প্রার্থীদের পলিথিনের ব্যবহার বেড়েই চলছে। রাজধানীর অনেক এলাকায়ই দেখা গেছে, পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার রাস্তার পাশে স্তূপ করে ফেলে রাখা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের বর্জ্য সংগ্রহকারীরা এসব পোস্টার নিয়ে ডাম্পিং স্টেশনে ফেলছেন। এরপরও কিছু পোস্টার গড়িয়ে নর্দমার মুখে পড়ে রয়েছে।নির্বাচন প্রচারপত্রে পলিথিন ও পোস্টার ব্যবহারের ফলে পরিবেশের কী ক্ষতি হতে পারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল আমাদের সময়কে বলেন, যে জনপ্রতিনিধি জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করছেন না, তার প্রার্থিতাই বাতিল করা উচিত। পলিথিন বা প্লাস্টিক পচতে ৩০০-৪০০ বছর লেগে যায়। যেভাবে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে পরিবেশ ধ্বংস তো হচ্ছেই, জলাবদ্ধতাও দেখা দিতে পারে। কাজেই এটা অন্যয়। আদালতের নির্দেশনা রয়েছে পলিথিন ব্যবহার না করার। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশনও পলিথিন ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে।পরিবেশের কথা চিন্তা করে নির্বাচন কমিশন থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে বিশেষ পরিপত্র পাঠানো হয়। সেই পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়- জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিবেশবান্ধব রাখার লক্ষ্যে প্রার্থীরা নির্বাচনী কার্যক্রমে বর্জ্য উৎপাদন কমানো এবং প্রচারপত্রে প্লাস্টিকজাত দ্রব্য বা পলিথিনের আবরণের ব্যবহার কিংবা প্লাস্টিকের ব্যানারের (পিভিসি ব্যানার) ব্যবহার বন্ধ করার ব্যবস্থা নেবেন।