তানজানিয়ায় ভারী বৃষ্টি-ভূমিধসে নিহত ১৫৫মাসের শুরুতে বৃষ্টির আভাস, গরম কমা নিয়ে সংশয়ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রআগামীকাল ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণশপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি
No icon

জলবায়ু ও করোনা বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুমকি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারী বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুমকি। তিনি এ সংকট মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ বৈশ্বিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে লেখা এক নিবন্ধে এমন আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদপত্রটির বিশেষ আয়োজন হান্ড্রেড ডেইজ টু সেভ দ্য আর্থ-এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।বিশ্বে যে দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে, বাংলাদেশ রয়েছে সেই তালিকার একেবারে সামনের সারিতে। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের প্রধান।আ থার্ড অব মাই কান্ট্রি ওয়াজ জাস্ট আন্ডার ওয়াটার। দ্য ওয়ার্ল্ড মাস্ট অ্যাক্ট অন ক্লাইমেট শিরোনামে ওই নিবন্ধে শেখ হাসিনা আপাতদৃষ্টিতে নিরাপদে থাকা দেশগুলোকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সত্যি হলে তারাও বেশিদিন নিরাপদে থাকতে পারবে না।নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, গত মাসেও আমার দেশের এক-তৃতীয়াংশ ছিল পানির নিচে। প্রায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে এবার, বর্ষা এখনও শেষ হয়নি। ১৫ লাখের বেশি বাংলাদেশি (বন্যায়) ঘর হারিয়েছে, হাজার হাজার হেক্টর ধানের জমি ভেসে গেছে।আমার দেশে এ বছর লাখ লাখ মানুষের খাদ্য সহায়তার দরকার হবে। বিপদ কখনও একা আসে না। মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর এলো বন্যা। তাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করা আরও কঠিন হয়ে গেল।

ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঝুঁকিতে থাকা এলাকা থেকে ২৪ লাখ মানুষকে আমাদের সরিয়ে নিতে হয়েছে, আর তা করতে হয়েছে তাদের কোভিড-১৯ এর আরও বড় ঝুঁকিতে না ফেলে।আপাতত সংক্রমণ আর মৃত্যুহার সীমিত রাখা সম্ভব হলেও যতক্ষণ পর্যন্ত এ রোগ থেকে কার্যকর সুরক্ষার একটি উপায় পাওয়া না যাচ্ছে, ততক্ষণ নিশ্চিন্ত হওয়ার উপায় নেই।অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে হওয়ায় আমাদের তৈরি পোশাক খাত এবং রফতানি আয় বড় ধাক্কা খেয়েছে। হাজার হাজার প্রবাসী কর্মীকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে, তাদের একটি বড় অংশ এখনও কাজ জোটাতে পারেনি।জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশকেও এখন লড়তে হচ্ছে জীবন বাঁচানোর জন্য। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়াতে হচ্ছে, আর্থিক ক্ষতি সামাল দিতে কোটি কোটি মানুষকে সাহায্য করতে হচ্ছে।আর এর সবকিছুর সঙ্গে এটাও দেখতে হচ্ছে- অর্থনীতি যেন ধসে না পড়ে। আমি সাহায্য পাওয়ার জন্য এসব বলছি না, বলছি সতর্ক করার জন্য। অনেক দেশ হয়তো জলবায়ু সংকটে এতটা ঝুঁকির মধ্যে নেই।কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এই বিধ্বংসী শক্তিকে এড়ানো তাদের পক্ষেও সম্ভব হবে না। আমাদের চেয়ে যারা ভাগ্যবান, সেসব দেশের খুব ভালো করে দেখা উচিত- কীসের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি।সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এভাবে বাড়তে থাকলে এই শতকের মাঝামাঝি সময়েই পৃথিবীর নিচু এলাকাগুলোর শতকোটি মানুষকে বাস্তুহারা হতে হবে। সেরকম একটি বিপর্যয় এড়ানোর জন্য বিশ্বের মানুষ কি সময়মতো উদ্যোগী হবে?জলবায়ু পরিবর্তন আর কোভিড-১৯ আজকের বিশ্বের জন্য বড় হুমকি, দুটোরই ফলাফল অনুমান করা সম্ভব। কাজেই এসব ঝুঁকি কমিয়ে আনার জন্য আমাদের আরও বেশি উদ্যোগী হতে পারা উচিত ছিল।