ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রআগামীকাল ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণশপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতিহিট অ্যালার্ট আরও তিন দিন বাড়তে পারেরাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথে অবরোধ চলছে
No icon

মার্চে বড় আন্দোলন থেকে সরে গেছে বিএনপি

চলতি মার্চ মাসে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে এগোচ্ছিল বিএনপি। ঘোষণাও ছিল প্রায় একই রকম। দলটির পরিকল্পনা ছিল- ইউনিয়ন, উপজেলা-জেলা-মহানগর শেষে বড় আন্দোলন গড়ে তোলার। সে অনুযায়ী, গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী সর্বত্র পদযাত্রা কর্মসূচিও করে দলটি।সর্বশেষ গত ৪ মার্চ অন্যান্য মহানগরের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো রাজধানী ঢাকায় ৫০ থানায় কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে পদযাত্রা কর্মসূচি করে বিএনপি। এদিন বড় আন্দোলনের ঘোষণা না দিয়ে আগামী ১১ মার্চ জেলা ও মহানগরে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। রাজনৈতিক পরিবেশ, পরিস্থিতি, সরকারের মনোভাব এবং রাজধানী ঢাকার সাংগঠনিক প্রস্তুতিসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে মার্চে বড় আন্দোলন করার চিন্তা থেকে সরে আসে বিএনপি।দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের গতি ওঠানামা করে। পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মসূচি পরিবর্তনও করা হয়। এরই মধ্যে যে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, রাজনীতিতে এটিও যেনতেন কর্মসূচি নয়।বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চায়, এখনই বিএনপি চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দিক, তা হলে তারা বিগত দিনের মতো গায়েবি মামলা-হামলা করে মাঠ থেকে নির্বাচনের আগেই বিএনপিকে বিতাড়িত করতে পারে। কিন্তু বিএনপি সে পথে না গিয়ে আন্দোলনের উত্তাপ ধরে রেখে মোক্ষম সময়ে পূর্ণশক্তি নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে।

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলেন, ক্ষমতাসীনদের নানা বাধা অতিক্রম করায় ধারাবাহিকভাবে বিভাগীয় গণসমাবেশ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সফল করায় আন্দোলনের পারদ বেশ উচ্চতায় উঠেছিল। বিএনপি নেতাদের বক্তব্যেও তা ফুটে ওঠে। কিন্তু ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ, নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, সব বাধা অতিক্রম করে সাংগঠনিক ৯ বিভাগে গণসমাবেশে নেতাকর্মী ও সমর্থকের বাইরে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের ফলে সরকার ভয় পেয়ে যায়। এ কারণে ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের ভেন্যু নিয়ে বিএনপি ও সরকারের মধ্যে টানাপড়েন দেখা দেয়। একপর্যায়ে ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়, যাতে ১ জন নিহতসহ অনেকে আহত হন। সেদিন দলীয় কার্যালয় থেকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সাড়ে চারশ নেতাকর্মীকে এবং পরের দিন গভীর রাতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।এ বিষয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের মূল্যায়ন, এসব ঘটনায় ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের আগে আন্দোলনের পারদ ওপরের দিকে না উঠে নিচের দিকে নামতে থাকে। যদিও বিএনপি নেতাদের ভাষ্য- ওই সমাবেশ থেকে তারা যুগপৎ আন্দোলনের বড় বার্তা দিতে পেরেছেন।

বড় নেতাদের জেলে নিলেও আন্দোলন থেমে থাকে না- এই বার্তাও দেওয়া গেছে। ওই সমাবেশ থেকে একযোগে জাতীয় সংসদ থেকে বিএনপির সাত এমপির পদত্যাগের ঘোষণা এবং পরে তা কার্যকর করা হয়। এর মধ্যে বিশেষ সফলতা হিসেবে মনে করা হচ্ছে ৫৪টি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে বিএনপির ১০ দফা সমর্থন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করা। এ অবস্থায় পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতে ধীরে ধীরে আন্দোলনের গতি বাড়তে থাকে।ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি হবে উল্লেখ করে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নয়াপল্টনে এক সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বার ইউনিয়ন পর্যায় থেকে পদযাত্রা শুরু করব। এর পরে ধীরে ধীরে আমরা উপজেলা, জেলা ও মহানগর এবং এর পর তাদের যে ক্ষমতার মসনদ, সেই মসনদ জনগণ দখল করে নেবে, জনগণের সরকার গঠন করবে।এর পর গত ৪ মার্চ ঢাকাসহ অন্যান্য মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি করে বিএনপি। ওই কর্মসূচি থেকে আগামী ১১ মার্চ জেলা ও মহানগরে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা মহানগরে বিএনপি এককভাবে ৫টি পদযাত্রা কর্মসূচি করে।