 
                                                                সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতা নিয়ে বিএনপির ভেতর দীর্ঘদিন ধরে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ কেউ এ জন্য মাঠ পর্যায়ের নেতৃত্বকে দায়ী করছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীর অধিকাংশই মনে করেন, সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনার অভাবে আন্দোলনে বারবার হোঁচট খাচ্ছে দল। নেতৃত্ব নিয়ে এমন সমালোচনার মধ্যেই আকস্মিক ঢাকাসহ দেশের চার মহানগর কমিটি এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। এটি সরকার পতনের আন্দোলনে ব্যর্থতার ফল, নাকি এর পেছনে অন্য হিসাবনিকাশ রয়েছে; শুরু হয়েছে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ।দলটির গুরুত্বপূর্ণ এসব ইউনিটের কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা আসে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। এ নিয়ে সারাদেশে দলের মধ্যে শুরু হয় আলোচনা। কেউ কেউ এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। তৃণমূল পর্যায়ে অনেক নেতাকর্মী এতে খুশি। তবে বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের কেউ কেউ ক্ষুব্ধ। অনেকে আবার এরই মধ্যে নেতৃত্বে আসতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে কমিটি ভাঙাগড়া নিয়ে বিএনপিতে বইছে ঝড় । নতুন কমিটিতে কারা আসতে পারেন, তা নিয়েও চলছে জল্পনা-কল্পনা।
বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ার পর দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ, ব্যর্থ সব কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে। গত ৭ জানুয়ারির ভোটের পর আন্দোলনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের ভূমিকা মূল্যায়ন শুরু করে দলটির হাইকমান্ড। এই পর্যালোচনা শেষে রাজপথের সক্রিয় নেতাদের দিয়ে দল ও অঙ্গসংগঠন পুনর্গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি এবং যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বলা হয়, পরবর্তী সময়ে নতুন কমিটি করা হবে। তবে নতুন কমিটির ঘোষণা ঈদের আগে না পরে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। অনেক নেতাকর্মী গতকাল দিনভর নতুন কমিটির অপেক্ষায় ছিলেন। তারা মনে করেন, যে কোনো সময় কমিটি ঘোষণা হতে পারে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি পৃথক বৈঠক করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে তারেক রহমান নেতাদের সহযোগিতা চান। বিএনপির চট্টগ্রাম ও বরিশাল মহানগর কমিটি গঠনের কথা আগেই জানিয়ে ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এদিকে একই দিন মধ্যরাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম ছাত্রদলের কমিটিও ভেঙে দেওয়া হয়।

 
                                             
                                             
                                            