NEWSTV24
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা
বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৩ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

কথা ছিল, ২০১৪ সাল থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়ক) দিয়ে চলবে গাড়ি। নানা বিপত্তিতে ৯ বছর পরও সেই উড়াল সড়কের কাজ শেষ হয়নি। কাজ করতে গিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে অন্য উন্নয়ন প্রকল্পের ঝঞ্ঝাট লেগেই আছে।২০২৩ সালের মার্চে এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর-বনানী অংশ চালু হবে; সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একাধিকবার এ ঘোষণা দিলেও কাটছে না প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা। ফলে ধীরগতিতে চলা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগতে পারে।সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর যতটুকু জমি দিয়েছে, তাতে মহাখালীর র;্যাম্পে ওজন ব্রিজ নির্মাণ সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) নির্মাণাধীন এক্সপ্রেসওয়ের বিনিয়োগকারী। মেট্রোরেলের এমআরটি-৫ (দক্ষিণ) লাইনের সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়ের অ্যালাইনমেন্ট সাংঘর্ষিক। কারওয়ান বাজার এলাকায় প্রয়োজন হবে গভীর খননে। এ জন্য রাস্তা বন্ধ রাখতে হবে তিন মাস। এ কাজে ৬ মিলিয়ন ডলার এবং ২৩৮ দিন বাড়তি সময় চায় এক্সপ্রেসওয়ের বিনিয়োগকারী।

হাতিরঝিলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণে রয়েছে রাজউকের আপত্তি। পান্থকুঞ্জের জমি দিতে চায় না পার্কটির মালিক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। পরিষেবা লাইন স্থানান্তরের টাকা নিয়েও ফেরত দিয়েছে সংস্থাটি। রেলওয়ের পরিকল্পনা রয়েছে কমলাপুরে মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণের। তাই এক্সপ্রেসওয়ের নকশা বদল করে টোল প্লাজা দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে এখনও সম্মতি দেয়নি রেল। আবার রেলের প্রকল্প, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন নির্মাণে বাধা হয়েছে এক্সপ্রেসওয়ে।অন্য প্রকল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে গত ২৯ জানুয়ারি সরকারপ্রধানের কার্যালয়ে সভা হয়। সাত সচিবসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা ছিলেন ওই সভায়। ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনিষ্পণ্ন বিষয়গুলো নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত হয়। তবে সেতু বিভাগের ৬ মার্চের সভা সূত্রে জানা গেছে, সমস্যা নিরসন হয়নি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. হাদীউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে প্রায় সব প্রকল্পের এই দশা। সমন্বয়, পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি ছাড়া কাজ শুরু হয়। এর পর পদে পদে বাধা আসে। প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়। বাড়ে খরচ ও ভোগান্তি।

বিদ্যমান রেললাইন বরাবর রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে চিটাগাং রোডের কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের (ইতাল-থাই) সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। উড়াল সড়কে ওঠানামায় থাকবে ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র;্যাম্প। সব মিলিয়ে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উড়াল সড়ক ২০১৪ সালে চালুর পরিকল্পনা ছিল।২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর উড়াল সড়ক নির্মাণে বিনিয়োগকারী ইতাল-থাইয়ের সঙ্গে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকায় সংশোধিত চুক্তি করে সেতু বিভাগ। মূল অবকাঠামো নির্মাণে ইতাল-থাই ৬ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এ জন্য চীনের দুই ব্যাংক থেকে ৮৬১ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।ভায়াবেলিটি গ্যাপ ফান্ডিং (ভিজিএফ) বাবদ সরকার দেবে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে ঘোষণা ছিল ২০১৯ সালেই চালু হবে প্রকল্পটি। পরে আরও দুই দফা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে প্রকল্প মেয়াদ।