সংঘাতের মধ্যেও মিয়ানমার থেকে আসছে গরু-মহিষআজ হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসরকারি ২৮ শিল্পপ্রতিষ্ঠান চলছে লোকসানেময়মনসিংহের ৩ উপজেলায় ভোট শুরু, নেই নারী ভোটার
No icon

ক্যাম্পে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের স্লোগান 'গো হোম'

আমরা খুশিতে নয়, বাংলাদেশে এসেছি গণহত্যার শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে। আমরা একমুহূর্ত এখানে থাকতে চাই না। আমরা শরণার্থী জীবন চাই না। নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই। আমাদের দাবিগুলো পূরণে মিয়ানমার যাতে বাধ্য হয়, সে জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।গতকাল রোববার উখিয়া লম্বাশিয়া ক্যাম্পে বাড়ি চলো বা গো হোম কর্মসূচির আওতায় মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন রোহিঙ্গা নেতারা।আজ সোমবার বিশ্ব শরণার্থী দিবস সামনে রেখে এ সমাবেশ হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে নারী, শিশু-কিশোরসহ প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বিভিন্ন দাবি ও স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে অংশ নেয়।সমাবেশে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা ঠেকাতে মাঠে তৎপর ছিল আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হওয়া সমাবেশে বক্তব্য দেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) নেতা ও রোহিঙ্গা শরণার্থী ডা. মো. জুবাইর, মাস্টার মো. ইউসুফ, মাস্টার আবুল কামাল ও মাস্টার নুরুল আমিন।

সমাবেশে মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে সাত দফা ঘোষণা পড়ে শোনান মাস্টার নুরুল আমিন। সমাবেশ মাঠের পাশে এআরএসপিএইচ কার্যালয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গুলি করে হত্যা করা হয় রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহকে। এর আগে এ ধরনের সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ।এবার শুরু থেকে প্রচারণার সঙ্গে এআরএসপিএইচ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জড়িত থাকলেও সমাবেশ হয়েছে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী র ব্যানারে। সাত দফা দাবি হচ্ছে- দ্রুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, দ্রুত রোহিঙ্গাদের নিজ নিজ গ্রামে (রাখাইন রাজ্যে) পুনরায় প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কার্যকর করা, রাখাইন রাজ্যে আইডিপি ক্যাম্প বন্ধ করা ও তাদের (রোহিঙ্গা) নিজ গ্রামে ফিরিয়ে নেওয়া এবং মিয়ানমারে নিরপরাধ লোকজনের ওপর (রোহিঙ্গা মুসলমান) অত্যাচার বন্ধ করা।

সমাবেশে মাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, মিয়ানমার আমাদের দেশ। আমরা নিজের দেশে ফিরে যেতে চাই। তবে তার আগে মিয়ানমার পার্লামেন্টে আমাদের রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতিসহ বাকি দাবি মানতে হবে। দাবি মানলে আমরা একমুহূর্ত এখানে থাকব না, মিয়ানমারে চলে যেতে রাজি আছি।ডা. মো. জুবাইর বলেন, আমরা বাংলাদেশে আর থাকতে চাই না। এই শরণার্থী জীবন আর চাই না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছি- আমাদের দাবিগুলো মানতে মিয়ানমারকে বাধ্য করে স্বদেশে ফিরে যেতে সহায়তা করুন। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং এ দেশের আইন মানতে রোহিঙ্গাদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাইমুল হক বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হয়েছে।