তানজানিয়ায় ভারী বৃষ্টি-ভূমিধসে নিহত ১৫৫মাসের শুরুতে বৃষ্টির আভাস, গরম কমা নিয়ে সংশয়ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রআগামীকাল ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণশপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি
No icon

এবার উড়োজাহাজে চেপে দেশে ঢুকছে রোহিঙ্গা

১০ ফেব্রুয়ারি। জেদ্দা থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০২ উড়োজাহাজটি। আউট পাস (বিশেষ ভ্রমণ অনুমতি) নিয়ে সেই ফ্লাইটে চেপে ঢাকায় পা রাখে সাঈদ হোসাইন ও ইসমাইল নামে দুই রোহিঙ্গা। তাদের সঙ্গে ছিল না পাসপোর্ট, ভিসা কিংবা নাগরিকত্ব সনদ। বাংলাদেশে ঢুকেই তারা ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে দু জনকে পাঠানো হয় বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে। শেষমেশ তাদের ঠিকানা হয় উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।এ বছরের প্রথম দুই মাসে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া থেকে সাঈদ ও ইসমাইলের মতো সাত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এর আগে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও ১৬ রোহিঙ্গা এই প্রক্রিয়ায় দেশে ঢোকে। একই সময়ে জালিয়াতি করে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে ধরা পড়ে ১২ রোহিঙ্গা। সব ঘটনায় জিডি হয়েছে থানায়। শুধু শাহজালাল নয়, চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়েও ঢুকছে কয়েকজন রোহিঙ্গা। নতুন করে একজন রোহিঙ্গাকেও আর আশ্রয় না দেওয়ার ব্যাপারে অনড় বাংলাদেশ। এই পটভূমিতে বিমানবন্দর দিয়ে রোহিঙ্গা প্রবেশ নতুন করে ভাবাচ্ছে। দেশের বিমানবন্দর হয়ে বৈধ কোনো কাগজপত্র ছাড়া রোহিঙ্গাদের প্রবেশের ঘটনা উদ্বেগজনক বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একজন রোহিঙ্গাকেও নতুনভাবে আশ্রয় দেওয়ার অবস্থা আমাদের নেই। বিমানবন্দর দিয়ে রোহিঙ্গা ঢোকার বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ও সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে আলোচনা করতে হবে।ইমিগ্রেশন পুলিশ ও বিমানন্দর থানা পুলিশ সূত্র বলছে, সর্বশেষ ২০ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আরও দুই রোহিঙ্গা। তারা হলো মুহাম্মদ হোসেন ও নূর আলম। সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর উখিয়ার জামতলী ক্যাম্পে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ বছরই কোনো কাগজপত্র ছাড়া শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে আরও যারা দেশে ঢুকেছে তারা হলো নুরুল জামাল, মো. শাহ আলম, মোহাম্মদ তারেক কাদের মিয়া ও খায়রুল আমিন। গত ১৪ জানুয়ারি এয়ার এরাবিয়ার জি-৯৫১০ ফাইটে চেপে বাংলাদেশে এসেছিলেন খায়রুল।

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে থাকছে। ২০১৭ সালের আগে থেকে লাখ চারেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সেনাচৌকিতে হামলার অজুহাত দেখিয়ে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর পর কয়েক মাসে বাংলাদেশে ঢোকে আরও সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। জনবহুল আর সীমিত সম্পদের কারণে বাংলাদেশের জন্য বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাড়তি একটি চাপ। আবার নানা অজুহাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেও দেরি করছে মিয়ানমার। এর মধ্যে বিমানবন্দর দিয়ে রোহিঙ্গারা ঢুকলে তা চলমান সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করবে।