তানজানিয়ায় ভারী বৃষ্টি-ভূমিধসে নিহত ১৫৫মাসের শুরুতে বৃষ্টির আভাস, গরম কমা নিয়ে সংশয়ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রআগামীকাল ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণশপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি
No icon

বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট

রমজানের দুই মাস আগেই শক্তিশালী সিন্ডিকেট মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। অতি মুনাফার আশায় সিন্ডিকেট রোজায় ব্যবহৃত পণ্যসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। পণ্যের এই অসহনীয় দামে সীমিত আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেওয়ায় বারবার এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তাই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ক্রেতাকে স্বস্তি দিতে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে।রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলেছে, গত বছর একই সময়ের তুলনায় এখন চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা-ময়দা, মাছ-মাংস, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি এমনকি লবণসহ ২০টি নিত্যপণ্য (সবজি ছাড়া) বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে কেজিতে পণ্যের দাম সর্বনিু ২ দশমিক ১৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ বেড়েছে।সরকারি এই সংস্থা আরও জানিয়েছে, গত বছর একই সময়ের তুলনায় এখন প্রতি কেজি চাল পাঁচ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে আটা-ময়দা ১০-১৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এখন প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ৩৬ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ২৫ টাকা ও পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ১৪৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটার খোলা পাম অয়েল ৩৬ টাকা ও পাম অয়েল সুপার ৩৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।টিসিবি সূত্র আরও জানায়, গত বছর এই সময়ের তুলনায় এখন প্রতি কেজি বড় দানার মসুর ডাল ৩০ টাকা, মাঝারি দানার মসুর ডাল ২০ টাকা ও ছোট দানার মসুর ডাল ১০ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি অ্যাঙ্কর ডাল ও ছোলা পাঁচ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ টাকা, হলুদ ৭০ টাকা, আদা ২০ টাকা, গরুর মাংস ২০ টাকা, খাসির মাংস ৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৫ টাকা, গুঁড়া দুধ ৪০-৫০ টাকা, চিনি ১০ টাকা, লবণ পাঁচ টাকা এবং প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিম ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, অসাধুদের কারসাজির কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অনেকবার সিন্ডিকেট চিহ্নিত হলেও কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। ফলে নানা ইস্যুতে গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে। তিনি বলেন, ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে দেশে বেশ কিছু আইন আছে, সেসব আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে। রোজা উপলক্ষ্যে বা করোনা সংক্রমণ বাড়ার জন্য ১০ দিনের পণ্য এক দিনে কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. এমকে মুজেরি বলেন, যে কোনো ব্যক্তিগোষ্ঠীর হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা চলে গেলে ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়। তাই ভোক্তার সুরক্ষা দিতে হলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের দরকার প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। কিন্তু দেশে সেটি হচ্ছে না। কিছু ব্যক্তি-গোষ্ঠীর হাতেই নিত্যপণ্যের নিয়ন্ত্রণ। এরা কারসাজি করলে তখন সরকারের আর করার কিছু থাকে না। তিনি মনে করেন, মুক্তবাজার অর্থনীতি থাকবে। কিন্তু তার মানে এই নয়, এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের যা খুশি তাই করার সুযোগ পাবে। বিশ্বের অনেক দেশে মুক্তবাজার অর্থনীতি থাকলেও সরকারের হাতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও থাকে। বাংলাদেশেও এ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখতে হবে। এর জন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর মনিটরিং সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। দেশের প্রেক্ষাপটে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করা এখন দুরূহ ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছে।