৩ দিন ভারত ভ্রমণে যেতে পারবেন না বাংলাদেশিরাসৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যুঢাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিদেশজুড়ে তাপপ্রবাহ বইছে, কিছু স্থানে বৃষ্টির আভাসযুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
No icon

অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে বৈদেশিক ঋণ পেতে চায় সরকার।

বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে এবং সংকটে পড়া অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তা পেতে চায় সরকার। যার পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নসহযোগীদের কাছে ঋণ ও সহায়তার জন্য দ্বারস্থ হয়েছে সরকার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ১০০ কোটি ডলার করে ঋণ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া জ্বালানি মূল্য এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব যেভাবে অর্থনীতিতে পড়ছে, তা মোকাবিলার জন্য এ অর্থ দরকার বলে বাংলাদেশের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টির কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এর আগে গত ২৪ জুলাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর আগাম ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে তিন বছরের জন্য ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, অর্থনীতির মৌলিক স্তম্ভগুলো ব্যাপক চাপের মধ্যে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ ঋণ বাড়ছে; তাল মিলিয়ে রাজস্ব বাড়ছে না। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ বেশি হারে বাড়ছে। স্বাধীনতার পর পঁয়তাল্লিশ বছরে বৈদেশিক ঋণ ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছিল। গত সাড়ে পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৯০ দশমকি ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ঋণ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা চাপে আছে।

তিনি বলেন, কভিডকালে দেখা গেছে বাইরের ধাক্কা সহ্য করার ক্ষমতা কম। ফলে করোনাকালে এ অভিঘাতে দেশে নতুন করে দারিদ্র্য তৈরি হয়েছে। সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি না থাকায়, প্রকৃত মজুরি না বাড়ায় এবং অধিকাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত হওয়ায় দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় জীবনযাত্রা ব্যয়নির্বাহের সংকট চলছে। ফলে সমাজে ভাঙন দেখা দিচ্ছে।জানা গেছে, আইএমএফকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়ার পরপরই বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে জাইকার প্রেসিডেন্ট ঢাকা সফর করেন। তার সঙ্গে বৈঠক করে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া জাইকার অর্থায়নে চলমান প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন স্বাভাবিক রাখারও অনুরোধ জানান।বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়ছে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও নিত্যপণ্যের দাম। ব্যাহত হচ্ছে সরবরাহ ব্যবস্থাও। কভিডের ক্ষতি থেকে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার পেতে নতুন বিপদ হিসেবে আসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস, সার ও ভোজ্যতেলের বাজার এখনো অস্থির। ফলে কেবল নয়টি পণ্যেই অর্থাৎ পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, তরলকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), কয়লা, চাল, গম, ভুট্টা, সার, পাম তেল ও সয়াবিন তেল আমদানিতে বাড়তি গুনতে হয়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। প্রতি ডলার ৯৪ শমিক ৭০ টাকা দরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় তা দাঁড়ায় ৭১ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। এ হিসাব ২০২১ সালের মে মাসের তুলনায় বর্তমান সময়ের। অর্থনীতির এ খারাপ সময়ে চিঠি পাঠানোটা যৌক্তিক ও সময়োপযোগী হয়েছে। এখন দরকার আলোচনা শুরু করা। আইএমএফের একটি মিশন দ্রুত ঢাকায় আসার প্রত্যাশা করছে অর্থ বিভাগ।