ঢাকা ছাড়লেন ডোনাল্ড লু বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছেড়েছেন শান্ত-সাকিবরাদেশের পাঁচ বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারিমে মাসের শেষ দিকে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়রাজশাহীতে বাগান থেকে গুটি আম নামানো শুরু
No icon

গরুর মাংসের দামে হঠাৎ বড় লাফ

রোজার সময় যত ঘনিয়ে আসছে কিছু পণ্যের দর ততই তেতে উঠছে। কোনোটির দর এতই বেড়েছে যে, ক্রেতার চোখ কপালে ওঠার মতো। সবচেয়ে বড় লাফ দেখা গেছে মাংসের বাজারে। শবেবরাত ঘিরে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে পণ্যটির দরে। গত দুই দিনে কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম।হঠাৎ করে দামের এমন ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, সারা বছর না কিনলেও শবেবরাতে অনেকেই মাংস কেনেন। আর বরাবরের মতোই এ সুযোগটি নিচ্ছে মুনাফালোভী ব্যবসায়ী চক্র। সরকার পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ আর প্রতিশ্রুতির কথা শোনালেও আসলে তা অসার প্রমাণিত হচ্ছে। এর প্রমাণ মাংসের বাজার।ক্রেতাদের কোনো অভিযোগই আমলে নেওয়ার ধার ধারেন না ব্যবসায়ীরা। তাদের যুক্তি, খামারিরা কোরবানির জন্য আগাম গরু সংগ্রহ করছেন। তাতে গরুর চাহিদা বেড়েছে। সেজন্য ব্যাপারীরা গরুর দাম বাড়িয়েছেন। ফলে গত দুই সপ্তাহে মাঝারি আকারের প্রতিটি গরুর দর ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেড়েছে। ৮০০ টাকার কমে বিক্রি করলে তাদের লোকসান গুনতে হবে। আর খামারিরা বলছেন, কৌশলে তাদের ওপর দোষ চাপিয়ে দাম বাড়ানোর পথে হাঁটছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। বাজারে শৃঙ্খলা আনতে দর নির্ধারণে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।তবে সরকারের সংশ্লিষ্টরা জানান, রোজায় কম দামে মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাজারে এর প্রভাব পড়বে বলে দাবি তাদের।

প্রায় চার মাস আগে হঠাৎ করে ছন্দপতন ঘটে মাংসের বাজারে। কেজি নেমে আসে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। তখন ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নির্দেশে খামারি ও ব্যবসায়ীরা বৈঠক করে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে প্রতি কেজি মাংসের দর ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বিক্রি হয় এ দরেই। তবে নির্বাচনের দুই দিন পরই কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে দর ওঠে ৭০০ টাকায়। এতদিন এ দর বা কিছুটা বেশিতে মাংস বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। গত বৃহস্পতিবারেও রাজধানীর বেশির ভাগ বাজারে ৭০০ টাকা দরে গরুর মাংস কেনা গেছে। হঠাৎ করে গত শুক্রবার তেজকুনিপাড়া, মালিবাগ, মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ কয়েকটি বাজার ও মহল্লায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ মাংস দোকান থেকে ৭০০ টাকা লেখা মূল্য তালিকা উধাও হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা কেজি বিক্রি করছেন ৭৫০ টাকা দরে। তবে গতকাল শনিবার এসব বাজারে কেজিতে আরও ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে কোথাও ৭৮০ আবার কোথাও ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।গতকাল মিরপুর শাহআলী বাজার থেকে ৭৮০ টাকা দরে মাংস কিনেছেন আব্দুল হালিম নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী। সমকালকে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ৬৫০ টাকা, দুই মাস না যেতেই কেজিতে দেড়শ টাকা বেড়ে গেলে। তখন ৬৫০ টাকায় বিক্রি করলে এখন কেন পারেন না ব্যবসায়ীরা। বাজারে নজরদারি নেই বলেই যে যার মতো দাম বাড়িয়ে ঠকাচ্ছেন মানুষকে।২০১৮ সালেও সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ৪২০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে পাঁচ বছরের ব্যবধানে দর বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

হঠাৎ কেন দাম বেড়েছে জানতে চাইলে শাহআলী বাজারের মোল্লা গোস্তের স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন   বলেন, দুই সপ্তাহ আগে যে গরু কিনেছি ১ লাখে, একই ওজনের গরু কিনতে এখন লাগছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি। দাম না বাড়িয়ে উপায় নাই।সমিতির সিদ্ধান্তে দাম বাড়ানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাট হাটের গতিতে চলে। গরুর দাম বাড়লে মাংসের দামও বাড়ে।গত এক সপ্তাহে প্রতিটি গরুর দাম অন্তত ১৫ হাজার টাকা বেড়েছে বলে জানান বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মোর্তুজা মন্টু। তিনি বলেন, গরুর গোলাম মোর্তুজা বলেন, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি কাউকে নির্ধারিত দরে বিক্রি করতে বাধ্য করতে পারে না। কারণ কেউ লোকসান দিয়ে বিক্রি করবে না। রোজায় মাংস ব্যবসায়ী সমিতি চেষ্টা করবে ৭৫০ টাকার মধ্যে দর রাখতে।