
টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক এলাকায় যানজট ও রাস্তায় পানি জমে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। গতকাল সকাল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি, আবার কখনো ভারী বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী ও দৈনন্দিন কারণে রাস্তায় নামা সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ এবং স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা। ঢাকায় গত সোমবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। গতকাল দিনভর বৃষ্টিতে রাজধানীর বেশ কয়েকটি মূল সড়কের নিচু অংশ এবং বিভিন্ন মহল্লার অলিগতিতে পানি জমে যায়। এতে কর্মজীবী মানুষকে চলাচলে বড় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাজধানীর মগবাজার এলাকার মধুবাগের বাসিন্দা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, অফিস মতিঝিল। রাস্তায় জমে থাকা পানিতে এত ময়লা-আবর্জনা যে, পা রাখার সাহস নেই। কোনো রিকশাও পাচ্ছি না; পেলে অন্তত মালিবাগ পর্যন্ত তো যেতে পারতাম। আবদুর রহমানের মতো সমস্যায় পড়েন উত্তরা থেকে নতুনবাজার পর্যন্ত আসা আরেক চাকরিজীবী মোহসিন শেখ। ভাটারা এলাকার এ বাসিন্দা বলেন, এমনিতেই যানবাহনের ওঠা মুশকিল। তার ওপর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। কারণ, রাস্তায় পানি জমে চলাচলে সমস্যা হয়। এতে নগরবাসীর দুর্ভোগ পৌঁছে চরমে। ১৫০ টাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা! গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, বাড্ডা পোস্ট অফিস গলি, মালিবাগ বাজার রোড, শাহবাগ, এলিফেন্ট রোড, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ পুরান ঢাকার বংশাল এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মগবাজার, টিকাটুলি, স্বামীবাগ ও গেন্ডারিয়ায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। পানি মাড়িয়েই কাজে বের হন স্থানীয়রা।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় যানজট সামলাতে বেগ পেতে হয় ট্রাফিকের দায়িত্বরতদের।যেসব স্থানে সড়ক মেরামতের কাজ চলছে, খানাখন্দের কারণে এসব এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে প্রচণ্ড যানজট দেখা দেয়, যা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়েছে অনেক কর্মকর্তাকে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। মধ্যবাড্ডায় হকার মতি মিয়া বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। সকাল থেকেই বেচাকিনি নাই। বৃষ্টিতেই কোনোমতে দোকান খোলে বসে আছি। তবে ক্রেতা নেই। সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা বৃষ্টির দিনে সড়কের বেহাল ও যানজট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের পথগুলো আবর্জনায় ভরে থাকায় দ্রুত পানি নামতে পারেনি। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। রাজধানীর বৃষ্টির পানি তিনটি মাধ্যমে চারপাশের নদ-নদীতে চলে যায়। এর একটি পাম্প-স্টেশন, বাকি দুটি স্লুইসগেট ও খাল। ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন স্লুইসগেটগুলোর বেশির ভাগই অকেজো। আর খালগুলোও পানিপ্রবাহের জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত নয়।