পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর শনিবার কিছুটা তাপমাত্রা বেড়েছিল। তবে রোববার (২১ ডিসেম্বর) ফের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্দ্রতা বৃদ্ধি ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের দাপট আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পুরো এলাকা ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। কুয়াশার কারণে সড়ক, মাঠ ও ঘাটে দৃষ্টিসীমা কমে যায়। এ সময় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। চাকলাহাট এলাকার দিনমজুর করিম মিয়া জানান, গত দুই দিন ধরে সকালে প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। কাজে বের হলে শীতের তীব্রতায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে, ফলে স্বাভাবিকভাবে কাজ করাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।একই কথা জানান স্থানীয় ভ্যানচালক তরিকুল। তিনি বলেন, ভোরবেলা ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় কিছুই স্পষ্ট দেখা যায় না। কুয়াশার জন্য ধীরে ভ্যান চালাতে হয়, যাত্রীও কমে গেছে।
এদিকে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কে চলাচলকারী ট্রাকচালক রুবেল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়েও সামনে ঠিকভাবে দেখা যায় না। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়, তাই অত্যন্ত সতর্ক হয়ে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।এর আগের দিন শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। কুয়াশা না থাকলেও সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। আর্দ্রতা বেশি থাকায় তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি হলেও ঠান্ডার অনুভূতি কমেনি। শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর, যেদিন পারদ নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে-যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও রোববার ফের কমেছে। আর্দ্রতা বেশি থাকায় শীতের অনুভূতি তীব্র হচ্ছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।