নবম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, দ্রুত স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠনসহচার দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনরত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের কর্মবিরতি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। এর ফলে বুধবার থেকে সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে।মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি-বাসমাশিসের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুস সালাম গণমাধ্যমকে বলেন,শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করার স্বার্থে আমাদের চলমান আন্দোলন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে সরকারকে আমরা আহ্বান এরমধ্যে আমাদের দাবি মেনে নিতে।দাবি মান না হলে পরীক্ষার পর আমরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
গত সোমবার থেকে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি শুরু করেন। এ কারণে ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গতকাল ও আজ মঙ্গলবার বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।মঙ্গলবার রাতেই গণমাধ্যমে পাঠানো বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয় এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা বাসমাশিস ঘোষিত কর্মবিরতি সাময়িক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বার্ষিক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যে মানসিক চাপের মধ্যে ছিল, তা অনুধাবন করে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এতে বলা হয়, আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও তাদের শিক্ষাজীবনকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব।তাই আগামীকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে বার্ষিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া সমাধানের পথে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ কামনা করছি, ভবিষ্যতে শিক্ষা কার্যক্রম যাতে আর বাধাগ্রস্ত না হয়। যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।
শিক্ষকদের চার দফা দাবি হলো
১. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করে নবম গ্রেডসহ পদসোপান নির্ধারণ এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেট প্রকাশ।
২. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন কার্যকর করা।
৩. সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের অনুমোদন প্রদান।
৪. ২০১৫ সালের মতো সহকারী শিক্ষকদের জন্য ২ থেকে ৩টি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বেতন-সুবিধা পুনর্বহাল করে গেজেট প্রকাশ।