লংমার্চে ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিহত করার ঘোষণাবিজয় দিবসে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ পেলেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তাউত্তরে ঘন কুয়াশা, জেঁকে বসছে শীতজুলাই বিপ্লবের কন্যারা ইতিহাস পরিবর্তনের ‘নায়িকা’: ড. ইউনূস
No icon

শেখ মুজিবকে জাতির পিতা বলা মূল সংবিধানের কনসেপ্টের পরিপন্থী: অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে কেউ অস্বীকার করে না, কিন্তু তাকে জাতির পিতা বলা মূল সংবিধানের কনসেপ্টের পরিপন্থী এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। বুধবার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্টে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের রুলের শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি। ওই পঞ্চদশ সংশোধনীতেই শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিলো।

অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে, মৌলিক অধিকার ধ্বংস করা হয়েছে। কেন পঞ্চদশ সংশোধনী অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না? এটা সংবিধানের অংশ হিসেবে রাখা যাবে না।

সংবিধানের ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে 'বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি' বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এ আইন কর্মকর্তা বলেন, এটার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে ভাষা দিয়ে জাতিসত্তা নির্ধারণ করা হয় না।

 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে এটা না যে, হাজার হাজার মানুষকে গুম করা হবে, ৬০ লাখের বেশি মানুষকে গায়েবি মামলায় আসামি করা হবে, বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হবে। যাদের হাত নেই, এ রকম মানুষকে আসামি করে বলা হয়েছে, তারা বোমা মেরেছেন। হজে থাকা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এসব হতে পারে না।

আসাদুজ্জামান বলেন, সংবিধানের ৭খ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। সংবিধানের মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র না। আমরা সমাজতন্ত্র বাদ চাচ্ছি। শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে কেউ অস্বীকার করে না। জাতির পিতা নিয়ে সিরিয়াস বিতর্ক আছে। জাতি বিভক্ত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৈরি করা সংবিধানে জাতির পিতা ছিল না। এটি পঞ্চদশ সংশোধনীতে ঢোকানো হয়েছে। জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এমন করা হয়েছে—তার (শেখ মুজিব) বিরুদ্ধে কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহ হবে। তাকে জাতির পিতা বলা সংবিধানের স্পিরিটের পরিপন্থী।

সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এ আইন কর্মকর্তা বলেন, এটার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে ভাষা দিয়ে জাতিসত্তা নির্ধারণ করা হয় না। ৭ক ও ৭খ অনুচ্ছেদের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার জন্য, গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য করা হয়েছে। অসৎ উদ্দেশ্যে স্বৈরশাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য করা হয়েছে। এটি আইনের শাসনের পরিপন্থী।

অনুচ্ছেদের ৮ এর বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এখানে ‘ধর্ম নিরপেক্ষ’ শব্দটা রাখার দরকার নেই। এই দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান। আগে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ছিল। এটা যেভাবে আগে ছিল সেভাবে চাচ্ছি। আর ২ ক–তেই বলা আছে, রাষ্ট্র সকল ধর্ম পালনে সমান অধিকার ও সমমর্যাদা নিশ্চিত করবে। অনুচ্ছেদ ৯-এ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’–এর কথা বলা হয়েছে। এটি সাংঘর্ষিক।