সোনাইমুড়ী উপজেলার ৪নং বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শামসুল আলম বিএসসি এর আকস্মিক মৃত্যুতে গুরুতর অভিযোগের তীর উঠেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ভূঁইয়ার দিকে। গত ২৭ নভেম্বর ২৫ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ভূঁইয়া হাইকোর্টে রিট আপীল করানোর উদ্দেশ্যে তাকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সে রাজি না থাকলেও পথে তাকে এ ব্যাপারে মানসিক চাপ দিতে থাকলে সে বুকে ব্যথা অনুভব করে এবং বেশ কয়েকবার তার বমি হয়। মৃত শামসুল আলমের পরিবার অভিযোগ করেছে, বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ভূঁইয়া ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য জোরপূর্বক মৃত শামসুল আলমকে উচ্চ আদালতে একটি রিট করানোর চেষ্টা করেন। রিট করার উদ্দেশ্যেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে মানসিক চাপের শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওমর ফারুক তাকে ঢাকা হৃদরোগ হসপিটালে রেখে চলে যান, এর কিছুক্ষণ পরেই বারগাঁও ইউপির এই সাবেক চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়। শামসুল আলমের পরিবার এই মৃত্যুর জন্য সরাসরি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফারুক মেম্বারকে দায়ী করেছে এবং তারা এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৪নং বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই আইনি জটিলতা চলছিল। নির্বাচনী ফলাফল জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল আলম নির্বাচনে জয়ী হলেও ভোট কারচুপির অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর নোয়াখালী জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ আহমদ সাহেব ফলাফল পুনর্বিবেচনা করতে আইনি চ্যালেঞ্জ জানান। আদালতের রায়ে গত ১৪ই মে, ২০২৫ তারিখে নির্বাচনী ট্রাইবুনাল ও সিনিয়র সহকারী জজ, সদর, নোয়াখালী 'শামসুল আলম' এর পরিবর্তে 'সাইয়েদ আহমেদ' কে ৫০৩ ভোটে বিজয়ী চেয়ারম্যান হিসেবে আদেশ প্রদান করেন। এই রায়ের বিরূদ্ধে সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম নির্বাচনী ট্রাইবুনালে আপীল দায়ের করেন। গত ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাইবুনাল উক্ত আপীল খারিজ করে দেয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব: এই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই ইউপি চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হলে বিএনপি নেতা ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার ফারুক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান।অভিযোগ উঠেছে, এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদটি পাকাপোক্ত করতে ফারুক মেম্বার মৃত শামসুল আলমের ওপর চাপ সৃষ্টি করে পুনরায় আদালতে রিট করতে, যার জেরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল।বারগাঁও ইউনিয়নে বর্তমানে এক অস্থিরতা ও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুর ঘটনাটি রাজনৈতিক চাপ এবং আইনি জটিলতার এক করুণ পরিণতি কি না, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।