বিচারকদের প্রেষণে বদলি ও পদায়নে শৃঙ্খলা আসছেইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৪৩ ফিলিস্তিনি নিহতকাতার গেলেন সেনাপ্রধানঢাকার তাপমাত্রা সম্পর্কে যা জানাল আবহাওয়া অফিসআওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে এনসিপির সমাবেশ আজ
No icon

বিচারকদের প্রেষণে বদলি ও পদায়নে শৃঙ্খলা আসছে

এক বিচারক এক কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি থাকতে পারবেন না। বিচারক বা তাঁর পরিবারের সদস্য কোনো জেলায় ক্রয়সূত্রে ৩০ শতাংশ কৃষি বা ১০ শতাংশ অকৃষি জমির মালিক হলে সেখানে পদায়ন পাবেন না। নিয়োগের আগে বিচারক যদি কোনো জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন, তাহলে তাঁকে পরের ৫ বছর সেখানে বদলি করা যাবে না।এমন সব বিধান রেখে অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রেষণ, বদলি ও পদায়নে প্রথমবারের মতো নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশনার আলোকে সম্প্রতি চার পৃষ্ঠার এই খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরে নীতিমালাটি কার্যকরের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।জানা গেছে, বিচার বিভাগ পৃথক্ক রণের দেড় যুগেও অধস্তন আদালতের বিচারক বদলি ও কর্মস্থল নির্ধারণের (পদায়ন) ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগ তথা আইন মন্ত্রণালয় প্রাধান্য পাচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিগত সরকারের আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির মধ্যে প্রকাশ্যে বাহাস হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরও বদলি ও পদায়নে শৃঙ্খলা ফেরেনি। অন্তত ২০ জন বিচারকের তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের গত সাত মাসের মধ্যে একাধিকবার বদলি করা হয়েছে। কারও কারও ক্ষেত্রে তিন দফা বদলি বা পদায়নের ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা জজ) মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, বদলি ও পদায়ন নীতিমালা প্রণয়নে জুডিশিয়াল সার্ভিস সদস্যদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। প্রধান বিচারপতি গত সেপ্টেম্বরে অভিভাষণে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এটি বাস্তবায়িত হলে পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন হবে।একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে অন্তত ১৪২ জন বিচারক ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় কর্মরত ছিলেন।বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের একটি তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, আইন মন্ত্রণালয়ে সদ্য পদত্যাগ করা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ১) বিকাশ কুমার সাহা বিভিন্ন পদে প্রায় ২০ বছর ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। মাঝে একবার চট্টগ্রামে বদলি হলেও বছর না ঘুরতে তিনি ফের ঢাকায় পদায়ন পান। সব মিলিয়ে তিনি প্রায় ২০ বছর আইন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে প্রথম সিনিয়র সহকারী সচিব পদে যোগ দেন। একইভাবে ১৫ বছরের বেশি সময় ঢাকায় ছিলেন এমন বিচারকের সংখ্যা সাতজন। ৪৪ জন বিচারক ছিলেন, যারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকায় কর্মরত। ৮ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় কর্মরত ছিলেন আরও ৭৩ জন বিচারক। এর বাইরে ১৭ জন বিচারক বিভিন্ন সময়ে ঢাকা বিভাগের বাইরে পদায়ন পান। কয়েক বছর পর তারা আবার ঢাকায় ফেরেন।খসড়া প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জুডিশিয়াল সার্ভিসে নিযুক্ত বিচারক নিয়োগের বিষয়ে সংবিধানের ১১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পৃথক বিধিমালা প্রণয়ন হয়েছে। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারকের কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা প্রণীত হয়নি। এর আগে গত নভেম্বরে এ নীতিমালার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।