
ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল সারাদেশের মানুষ। কোথাও স্বস্তি নেই। ভোর কিংবা রাতেও গরমের তেজ কমছে না। টানা তিন দিন ধরে এমনই দহন জ্বালায় জ্বলছে দেশ। নেই বৃষ্টির দেখা। শনিবার ঢাকায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।সিলেট ও সুনামগঞ্জের আশপাশে ছাড়া অনেক এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৈশাখের শেষ বেলায় এসে দেশজুড়ে বয়ে চলা তাপপ্রবাহের মধ্যে তিন দিনের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ছুটির দিনে সকাল থেকেই তেতে পুড়ে ছিল রাজধানী। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে তাপপ্রবাহ এখন সবচেয়ে বেশি। এর সঙ্গে চট্টগ্রাম, বরিশাল বিভাগেও তাপপ্রবাহ আছে। এর প্রভাবে ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগে তাপপ্রবাহ অনুভূত হচ্ছে। এ ভ্যাপসা গরম থেকে কবে মুক্তি আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে সাধারণ মানুষ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই তাপপ্রবাহ আগামীকাল সোমবার ধীরে ধীরে কমে আসতে পারে। ওই দিন থেকে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী হতে পারে।আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ধীরে ধীরে তাপপ্রবাহ ১৮ বা ১৯ মের মধ্যে কমে আসতে পারে। এই সময়ে কালবৈশাখীরও সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রচণ্ড গরম মানুষের জীবনকে করে তুলেছে বিপর্যস্ত। তৈরি হচ্ছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এ গরমকে বৈজ্ঞানিকভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বলা হয়। অনেক দেশে এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে সতর্কতা জারি করা হয়। প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে বের না হন, সে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তা নেই। শীত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বন্যায় সরকার মানুষকে সহায়তা করে। এমন গরমেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সরকারের অনুদান জরুরি।রাজশাহী ব্যুরো জানায়, শুক্র ও শনিবার টানা দু দিন ধরে ৪০ ডিগ্রির ওপরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। ঘরের বাইরে গেলেই আগুনের হলকা লাগছে চোখে-মুখে। গতকাল বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক শূন্য ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।নগরীর বাসিন্দারা জানান, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। প্রচণ্ড গরমের কারণে শহরের রাস্তাঘাট দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে রিকশাচালক, নির্মাণ শ্রমিক ও দিনমজুররা রোদ ও গরম উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী তারেক আজিজ বলেন, তাপমাত্রা সব জায়গাতেই বেশি। রোববার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।