বিচারকদের প্রেষণে বদলি ও পদায়নে শৃঙ্খলা আসছেইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৪৩ ফিলিস্তিনি নিহতকাতার গেলেন সেনাপ্রধানঢাকার তাপমাত্রা সম্পর্কে যা জানাল আবহাওয়া অফিসআওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে এনসিপির সমাবেশ আজ
No icon

তিন জায়গায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ লাগবে

আগামী মাসে নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করবে সরকার। আগামী বাজেট এমন এক সময়ে দেওয়া হচ্ছে, যখন দেশের অর্থনীতি উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকটসহ কিছু সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, এবারের বাজেটের আগে সার্বিকভাবে অর্থনীতির অবস্থা আগের চেয়ে দুর্বল হয়েছে।দুর্বলতার বিষয়ে তুলনামূলক মূল্যায়ন জানতে চাইলে ড. জাহিদ হোসেন  বলেন, অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সূচকের বিষয়ে সরকারি তথ্যেই এর প্রতিফলন রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে গত বছরের এপ্রিল মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। এই এপ্রিলে হয়েছে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। বিবিএসের সর্বশেষ প্রাক্কলন অনুযায়ী গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গত বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিশেষত শিল্প খাতে বেশ কমেছে। গত বছর এ সময়ে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ যা ছিল, এখন তার চেয়ে অনেক কম। এর বাইরে আর্থিক খাতের দুর্দশা বেড়েছে। শুধু খেলাপি ঋণ নয়, সার্বিকভাবে আগে থেকেই দুর্বল থাকা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দুর্বল হয়েছে।

বাজেটের মাধ্যমে এসব দুর্বলতা কতটুকু ঠিক করা যাবে এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহিদ হোসেন বলেন, একটা বাজেট দিয়ে সবকিছু ঠিক করা যাবে না। তবে তিনটি জায়গায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। প্রথমত, সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা খুব জরুরি। এ কারণে বাজেটের প্রভাবে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ যেন তৈরি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। অন্যদিকে বাজেটের কারণে নতুন করে ডলারের যাতে বাড়তি চাহিদা তৈরি না হয়, তা বিবেচনায় নিতে হবে।তাঁর মতে, দ্বিতীয় জায়গাটি হলো কাঠামোগত সংস্কার। সবচেয়ে জরুরি হলো আর্থিক খাতে সংস্কার। বর্তমানে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার পর্যায়ে।এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর মানুষের আস্থা কমে গেছে। এগুলোকে দুর্দশামুক্ত করতে হলে আগে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। করপোরেট সুশাসনের উন্নতি ছাড়া তা সম্ভব নয়। বাজেটের মাধ্যমে সরকার অন্তত এটুকু শর্ত দিতে পারে যে, সরকারের মালিকানা আছে এমন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুপরিকল্পিত সংস্কার না করলে মূলধন ঘাটতি পূরণে টাকা দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক গত ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতের সংস্কারের জন্য দ্রুত সংশোধনমূলক কার্যক্রম বা পিসিএ নামে একটি গাইডলাইন জারি করেছে। কিন্তু এর বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২৫ সালের মার্চ মাস থেকে। সরকার বাজেটের মাধ্যমে সরকারি ব্যাংকগুলোর জন্য ওই গাইডলাইন বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিতে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে।