
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হামলার পর গোপালগঞ্জে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অজানা আতঙ্ক সাধারণ মানুষের মধ্যে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তিন ঘণ্টা বিরতি দিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও সেনা টহল চলছে পুরো গোপালগঞ্জে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে চলছে যৌথ বাহিনীর অভিযান। বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন ২০ জন। এদিকে গুলিতে নিহত চারজনের কারও সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত হয়নি। রাতেই তাদের দাফন ও সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার দিনভর সংঘর্ষে নিহতরা হলেন- শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (৩০), কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামের কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (১৭), শহরের শানাপাড়ার সোহেল রানা (৩৫) এবং সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন।সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল গোপালগঞ্জ পরিদর্শন করেছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সন্ধ্যা ৬টায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সন্ধ্যা ৬টায় বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত কারফিউর সময় বাড়ানো হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জনগণের জন্য কারফিউ শিথিল থাকবে এবং দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারফিউ থাকবে।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে সহিংসতা ও পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক। গতকাল গোপালগঞ্জ ডিসি অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় জনমনে কোনো আতঙ্ক দেখছি না। জনগণের মনে শান্তি আনয়নের জন্য আমাদের যা যা করণীয় ঢাকা রেঞ্জ এবং বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে তা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের কোনো নিস্তার নেই। তারা যেখানেই যাক বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না। গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।