
বোমা বর্ষণের পাশাপাশি, ইসরায়েলি সেনারা উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব গাজায় বিস্ফোরকযুক্ত রোবট ব্যবহার করে এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। দুই বছরের যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করেছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। ক্ষুধা, বোমা আতঙ্ক আর মৃত্যুর ভয়ে দিশেহারা ফিলিস্তিনিরা কোনো নিরাপদ আশ্রয়ের নিশ্চয়তা ছাড়াই শহর ছেড়ে পালাতে বাধ্যে হচ্ছেন।ইসরায়েলের দখল পরিকল্পনার প্রথম দিনগুলোতে অনেকেই শহরে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সামরিক বাহিনী যখন প্রাণঘাতী বোমা হামলার গতি বাড়ায়, উচ্চ ভবন, বাড়ি ও নাগরিক অবকাঠামো ধ্বংস করছে- তখন যারা যাত্রা করার সামর্থ্য রাখেন, তারা দক্ষিণের দিকে চলে যাচ্ছেন। তবে কোনো নিরাপদ আশ্রয়ের নিশ্চয়তা ছাড়াই অজানা গন্তব্যে পাড়ি জমাচ্ছেন তারা।এদিকে, মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনারা অন্তত ৯১ জনকে হত্যা করেছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমুদ্রতীরবর্তী সড়ক থেকে পালানোর সময় ইসরায়েলের বোমা একটি গাড়িতে আঘাত হানে। এতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
শহরের কমপক্ষে ১৭টি আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে, যার মধ্যে পূর্ব তুফাহ এলাকায় অবস্থিত আইবাকি মসজিদও রয়েছে।এই মাসের শুরুতে, মানবাধিকার সংস্থা ইউরো-মেড মনিটর জানিয়েছিল, সেনারা ১৫টি এমন রোবট মোতায়েন করেছে, প্রতিটি রোবট ২০টি পর্যন্ত আবাসিক ইউনিট ধ্বংসের ক্ষমতা রাখে।বোমা ও গুলির মধ্যে হাজার হাজার বাসিন্দা শহর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, অনেকে ভয় পাচ্ছেন তারা কখনো ফিরে আসতে পারবে কি না। ভ্যান ও গাধার গাড়িতে মানুষ তাদের শেষ জিনিসপত্র নিয়ে পালাচ্ছেন।জাতিসংঘের মহাসচিব এই অভিযানকে ভয়াবহ বলে অভিহিত করেছেন।ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ এক্স-এ লিখেছেন, গাজা জ্বলছে ।এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে এ মাসের শেষে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। টাইমস অব ইসরায়েল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু এ তথ্য জানান। এ সময় তিনি গাজা সিটিতে চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যে হামাসকে জিম্মিদের ক্ষতি না করার কঠোর সতর্কবার্তাও দেন।নেতানিয়াহু জানান, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। এর তিন দিন আগে তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন।তিনি জানান, সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে এ আমন্ত্রণ পান। এর আগে কাতারে হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলের ৯ সেপ্টেম্বরের হামলার পর থেকে তাদের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। সবগুলো ইতিবাচক ছিল বলেও জানান তিনি।