প্রকৃতির অপরূপ মায়াবী সবুজের গায়ে সাদা চাদরটানা ৫ দিন ঝরবে বৃষ্টি, ৭ জেলায় ঝড়ের শঙ্কাআলোচনায় বেশিরভাগ ইস্যুতে উভয়পক্ষ একমতবৃষ্টি-বন্যায় দুর্ভোগে লাখো মানুষএসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ আজ
No icon

আলোচনায় বেশিরভাগ ইস্যুতে উভয়পক্ষ একমত

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফা শুল্ক আলোচনার প্রথম দিন শেষ হয়েছে। আলোচনায় বেশিরভাগ ইস্যুতেই উভয় পক্ষ একমত হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় এক ফেসবুক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা জানান, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক ইস;্যু নিয়ে আলোচনার প্রথম দিন শেষ হয়েছে। কাল, পরশুও আলোচনা চলবে। যুক্তি-তর্কে অধিকাংশ বিষয়ে দুইপক্ষ একমত হয়েছে। তবে এখনই শুল্ক ইস;্যু নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্কের প্রায় সবকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে এই বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় উভয় পক্ষ ফের বৈঠকে বসবে। শুক্রবারও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।বাংলাদেশের পক্ষে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। ঢাকাস্থ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত হন।বুধবার সকালেই ঢাকা থেকে ওয়াশিংটন পৌঁছে সরাসরি বৈঠকে অংশ নেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী।অন্যদিকে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কৃষি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও কপিরাইট বিষয়ক সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন।যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনার প্রথম বৈঠকে একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আলোচনা হয়—যা বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক থেকে অব্যাহতি বা ছাড় দিতে পারে।

গতকাল বৈঠক শুরুর আগে মোবাইল ফোনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন  বলেন, সচেতনভাবেই সার্বিক ইস্যুটি পর্যালোচনায় রয়েছে। শুধু শুল্ক ইস্যু নয়, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে দেশের জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, সে বিষয়গুলো নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হবে। সার্বিকভাবে দেশের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে ভালোকিছু পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার আগে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে চুক্তির কিছু ডকুমেন্টও পাঠানো হয়েছে, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। সেখানে সামরিক সরঞ্জাম, এলএনজি, গম, কৃষিপণ্য, তুলা, উড়োজাহাজসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি সহজীকরণের কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর বাইরে প্রস্তাবিত চুক্তির এনেক্সার ডকুমেন্ট দিয়েছে দেশটি।শুক্রবার পর্যন্ত তিনদিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের আলোচনা চলবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।ওই কর্মকর্তা বলেন, ইউএসটিআর কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে নমনীয় সরকার। আর শুল্ক ছাড় দেওয়া হলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির কারণে বেসরকারি খাতের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই।

একইসঙ্গে সরকারিভাবেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গত এপ্রিল থেকেই দেশটি থেকে এলএনজি, গম ও তুলা আমদানি বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের ওপর শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও চীনের উপর প্রস্তাবিত পারস্পরিক শুল্কহারও বাংলাদেশের চেয়ে কম।যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের ওপর সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করায় রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।